১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

ধর্মপাশায় হাওরে ডুবন্ত বেড়ীবাঁধ বাস্তবায়নে ধীরগতি পিআইসি বিহীন অনেক বাঁধ অরক্ষিত

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১

গিয়াস উদ্দিন রানা,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) সুমামগঞ্জের ধর্মপাশা ফসল রক্ষা ডুবন্ত বেড়ীবাঁধ বাস্তবায়নে ধীরগতি। পিআইসি বিহীন অনেক বাঁধ অরক্ষিত। অনেক পিআইসিরা প্রথম কিস্তির টাকা নিয়ে বাড়ীতে বসে নাভীতে তেল মালিশ করছে। প্রকল্পিত স্থান ফাঁকা। অবৈধ ৮টি হাওরে ১৭৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মানে ১৬৯টি পিআইসি কমিটি” প্রাক্কলিত ব্যয় ৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা” কাজের গতি নেই ধর্মপাশা উপজেলায় চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কাবিটার অর্থায়নে উপজেলার ৮টি হাওরে ১৭৩ কিঃমিঃ ডুবন্ত ফসল রক্ষাবাঁধ সংস্কার ও মেরামতের জন্য ১৬৯টি প্রকল্প তৈরী করা হয়। এর বিপরিতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী কোন মামলার আসামী, সরকারী চাকরী জীবি পিআইসি কমিটিতে থাকতে পারবে না। যে হাওরে পিআইসি হবেন ওই হাওরে তার জমি থাকতে হবে। এ বছর কাবিটা নীতিমালার বিপরিতে পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে কৃষকদের অভিযোগ।

ইতিমধ্যে ১৬৯ পিআইসি প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ভ্যাকো-এসকোবেটার, ড্রাম ট্রাক-লড়ী গাড়ী ইত্যাদি এসে তাদের প্রকল্পিত স্থানে কাজ করলেও কিছু কিছু প্রকল্পিত স্থান ফাঁকা রয়েছে। অধ্যক্ষ ব্যক্তিরা পিআইসি হয়ে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরও প্রকল্পিত স্থান ফাঁকা রেখে বাড়ীতে বসে নাভীতে তেল লাগাচ্ছেন। এসব দায়িত্ব হিন পিআইসিদের বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট হাওরে যাদের জমি আছে এমন ব্যক্তিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) বেঁধে দেওয়া নীতিমালা অনুযায়ি গত ১৫ জানুয়ারী থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২ ফেব্রুয়ারী মধ্যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও অনেক পিআইসির কাজ এখনো শুরুই করেনি।
এবছর হাওরের পানি দেরিতে নামায় এসব প্রকল্প গুলো বাস্তবায়নে বিলম্বিত হ”েছ। হাওরে পানি বেশী থাকায় একাধিক ক্লোজারে বরাদ্দ অপ্রতুল। যেমন, সাথারিয়া-পাথারিয়া হাওর বানারসিপুর গ্রামের পাশে (মজিদ খালীর খাল) ওই ক্লোজারটি ১২১ নং প্রকল্প, পিআইসি আব্দুল জব্বার, ক্লোজারে বরাদ্দ ২০ লাখ টাকা। ওই টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই প্রকল্পের বিশাল গর্তটির বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় ওই প্রকল্পের পিআইসি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন-মনিটরিং কমিটির সভাপতি বরাবরে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।
চলতি মৌসুমে কাবিটার অর্থায়নে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় উপজেলার ৮টি হাওরে ১৭৩ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ সংস্কার ও ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ১৬৯টি পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়। এর বিপরিতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাবিটা ও (পাউবোর) নীতিমালা অনুযায়ী, যে সব কৃষকের জমি নাই তারা পিআইসি হওয়ার অযোগ্য। যে হাওরে যাদের জমি আছে ওই হাওরের তারাই পিআইসি হওয়ার যোগ্য। এক হাওরের কৃষক অন্য হাওরের পিআইসি হতে পারবে না।
রামসার টাঙ্গুয়ার হাওর সংলগ্ন গুড়মার বর্ধিত অংশ প্রকল্প নং-১৪৬ পিআইসি লেলিন সরকার ও পার্শ্ববর্তী প্রকল্প নং-১৪৭ পিআইসি আব্দুল আজিজ। ওই পিআইসিদের কাজের গুনগত মান ভাল হল। তাদের বরাদ্দ কম হওয়ায় উৎসাহ হারিয়েছে। ওই দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অপ্রতুল। ওই দুই পিআইসির বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির সভাপতি বরাবর আবেদন করেছেন বলে তারা জানান।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) ও কাবিটা নীতিমালা তুয়াক্কা না করে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়নে পিআইসি কর্তৃক নজির বিহীন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধানকুনিয়া হাওর রক্ষাবাঁধ বা¯’বায়নে উপ প্রকল্প পিআইসি নং-১, দেলোয়ার হোসেন সে বাঁধের গুড়া থেকে কাঁদা ও পলিমাটি তুলে বাঁধ মেরামত করছে। ওই বাঁধটির নিচের অংশ ভেজা থাকবে ওই মাটি শুকানোর কোন সুযোগ নেই বিধায় বাঁধটি ঝুঁকীপূর্ণ অব¯’ায় নির্মান কাজ চালিয়ে যা”েছ।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সবিবুর রহমান তিনি বলেন, যে, সমস্ত ক্লোজার ইষ্টিমেট করতে গিয়ে কাজের তুলনায় বরাদ্দ কম হয়েছে এসব প্রকল্পের পিআইসিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করবেন। পরে আমাদের লোকজন গিয়ে পূনরায় মেজারমেন্ট করে প্রয়োজন মতো বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে কোনো ক্লোজার অথবা বেড়ীবাঁধে ভিজা ও পলিমাটি দেওয়া যাবে না।
উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুনতাসির হাসান
তিনি বলেন, সরকারী চাকরিজীবি কোন প্রকল্পের পিআইসি অথবা পিআইসিদের সহকারী হিসেবেও থাকতে পারবে না। যে, হাওরে পিআইসির জমি নেই ওই হাওরের পিআইসি হতে পারনে না। যদি এমনটাই হয়ে থাকে আর ওই পিআইসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হলে আমরা ওই পিআইসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যব¯’া নেব।
সুনামগঞ্জ জেলা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ সহকারী প্রকৌশলী ও ধর্মপাশা উপজেলার দায়িত্বে ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ ইমরান হোসেন তিনি বলেন, মামলার আসামী এবং সরকারী চাকরিজীবি পিআইসি হবে কি না এমন কোন নির্দেশনা আমাদের নেই। তবে সে একজন কৃষক হিসেবে পিআইসি হতে পারে।
চামরদানী ইউনিয়নের সাজদাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপিকা রঞ্জন সরকার বলেন, আমি ভ্যাকো-ড্রাম ট্রাক ও লড়ী গাড়ী কন্টাক এনে পিআইসিদেও কাছে ভাড়া দিয়েছি বিধায় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ আমি দেখাশোনা করছি।

197 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন