১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

৪ দফা দাবিতে দপ্তরি কাম প্রহরীদের অধিদফতর ঘেরাও

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯

বেতন বৈষম্য নিরসনসহ চার দফা দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ঘেরাও করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরীরা। পরে অধিদফতরের মহাপরিচালক দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে কর্মস্থলে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা।

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির ব্যানারে রোববার সকালে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দপ্তরী কাম প্রহরীরা সমাবেত হন।

আন্দোলকারীরা জানান, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৭ হাজার দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়। সরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি করেও আমরা ন্যায্য বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। অমানবিক ও নজিরবিহীনভাবে আমাদের দিনে দাপ্তরিক কাজ ও রাতে প্রহরার দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ২০১৩ সালে এ পদে নিয়োগের পর থেকে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আমাদের কোন সাপ্তাহিক ছুটি নেই, নানাবিধ সমস্যার কারণে এবং চাকরি জাতীয়করণের জন্য ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করি। চলতি বছর ৩০ জুলাই আদালতের রায় আমাদের পক্ষে আসলেও এ বিষয়ে অধিদফতর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সাধন কান্ত বাড়ই বলেন, সারাদেশে ৩৭ হাজার দপ্তরী কাম প্রহরীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ, টয়লেট পরিষ্কার, বাগান পরিষ্কার, দাপ্তরিক কাজসহ অনেককে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। রাতে আবার বিদ্যালয় পাহারার কাজ করতে হয়। বিদ্যালয়ে চুরি হলে আমাদের জরিমানা দিতে হয়। এ পর্যন্ত অনেককে চুরি হওয়ার জন্য জরিমানা দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলেও আমাদের রাজস্ব খাতে নেয়া হচ্ছে না, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ না হওয়ায় প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। সপ্তাহে একদিনও আমরা ছুটি পাই না। এসব কারণে বাধ্য হয়ে আমরা অধিদফতর ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছি।

এ সময় সভাপতি চার দফা দাবি ঘোষণা করেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে – দপ্তরী কাম প্রহরীদের পদটি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তকরণ, আইনানুযায়ী কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বেতন বৈষম্য নিরসন এবং সাপ্তাহিক ছুটির ব্যবস্থা করা।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অধিদফতরে প্রায় পাঁচ হাজার দপ্তরী কাম প্রহরী সমাবেত হন। তারা মাথায় ফিতা বেঁধে, ব্যানার নিয়ে সমাবেত হয়ে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান ও বিক্ষোভের পর অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মঞ্জুর কাদির আন্দোলনকারীদের মাঝে উপস্থিত হন। এ সময় মহাপরিচালক আন্দোলনকারীদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে বলেন, দপ্তরী কাম প্রহরী পদ সৃজন করতে আমরা জনপ্রশাসনে চিঠি দিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের সমস্যার বিষয়টি আমাদের জানা আছে, দ্রুত আপনাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন। আন্দোলন ছেড়ে সবাইকে নিজ নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আন্দোলনকারীরা একমাসের আলটিমেটাম দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন মোল্লা ঘোষণা দেন এক মাসের মধ্যে যদি চার দফা দাবি পূরণ না হয় ফের লাগাতর আন্দোলন ও অধিদফতর ঘেরাও করা হবে।

121 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন