২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

থেমে যাচ্ছে মীমের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন

আপডেট: জুলাই ৫, ২০১৯

উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া :
পড়ার ফাঁকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রাইভেট পড়িয়ে শিক্ষাযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থী মানসুরা মীম। সে এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। মীম পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চর চাপলী গ্রামের রিকশা চালক নাসির হাওলাদারে মেয়ে। প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো টাকা দিয়ে আলহাজ্ব জালালউদ্দিন কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হলেও আর্থিক সংকটে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। ঘরে অসুস্থ্য মা জাকিয়া বেগম মৃত্যুশয্যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করালেও আর্থিক সংকটে এখন ঘরে বসে কোন রকম চিকিৎসা হচ্ছে। বাবা রিকশা চালিয়ে যা পায় তা দিয়ে অসুস্থ্য মায়ের ঔষধ, দু’মুঠো ভাত যোগাড় ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া ভাই আলাইহীমের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে মীমকে কলেজে পড়ানো তাঁর পÿে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মীমের ঘরে অসুস্থ্য মা জাকিয়া বেগম মৃত্যুশয্যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করালেও আর্থিক সংকটে এখন ঘরে বসে কোন রকম চিকিৎসা হচ্ছে। বাবা রিকশা চালিয়ে যা পায় তা দিয়ে অসুস্থ্য মায়ের ঔষধ, দু’মুঠো ভাত যোগাড় ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া ভাই আলাইহীমের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে মীমকে কলেজে পড়ানো তাঁর পÿে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
মাত্র ১০ বছর বয়সে তার সহপাঠীরা যখন বই খাতা নিয়ে স্কুলে যেতো, ঠিক সেই সময়ে তাকে যেতে হয়েছে সুতার কারখানায়। দিনরাত দুই বছর সুতার কারখানায় কাজ করার ফলে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়া হয়নি তার। ÿুধা ও দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে দুই বছরের জমানো টাকা দিয়ে পরিবারের অসম্মতিতে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয় মীম। এর পর সে এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু মেধাবী এ মীমের স্বপ্ন হয়তো থেমে যাবে উচ্চ শিÿা শুরুর মাঝ সিড়িতে।
শিÿার্থী মানসুরা মীম কান্না ভেজা কন্ঠে জানায়, ইচ্ছা না থাকলে এখন আমি হয়তো কোন কারখানার শ্রমিক হতাম। শিÿা জীবনের দুই বছর ঝরে গেছে কারখানায় কাজ করে। ইচ্ছে আছে ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু কে পূরণ করবে আমার স্বপ্ন। আমার বাবা রিকশা চালায়, মা ঘরে অসুস্থ্য মৃত্যুশয্যায়। কলেজে ভর্তি হয়েছি কিন্তু বই, খাতা কিনতে পারিনি।
মীমের মা জাকিয়া বেগম বলেন, মীমের মতো এতো কষ্ট করে কেউ পড়বে না। ক্লাস ফাইভ পাশ করার পর সিক্সে ভর্তি করাতে পারিনি টাকার অভাবে। দুই বছর ঢাকায় সুতার কারখানার কাজ করে ১০ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরেছে। এতো কষ্ট করে ও ভালো পাশ করেছে।
চাপলী গ্রামের স্কুল শিÿক মো.নুরুন্নবী জানান, মীম খুবই মেধাবী। কিন্তু ওর পরিবারে ঠিকমতো চুলো জ্বলেনা। এখন দূ:শ্চিন্তা তার পরিবার ওকে নিয়ে।

129 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন