১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

নবম ওয়েজ বোর্ডের রিটের প্রতিবাদে ১০ সাংবাদিক সংগঠনের বিবৃতি

আপডেট: আগস্ট ৯, ২০১৯

নবম ওয়েজ বোর্ডের রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশের প্রাক্কালে নোয়াবের রিট আবেদনের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ (ডিইউজে) দশ সাংবাদিক সংগঠন।

বুধবার (৭ আগস্ট) যৌথ বিবৃতিতে বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ অন্য সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, যখন সাংবাদিক সমাজ নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেটের অপেক্ষায় তখন গোপনে হাইকোর্টে গিয়ে একটি মীমাংসিত বিষয়কে বিলম্বিত করার জন্য নোয়াব কাপুরুষোচিত এ কাজ করেছে।

বিবৃতিতে বিএফইউজেসহ ১০ সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা বলেন, নোয়াবের এ ধরনের হঠকারী পদক্ষেপ সংবাদপত্র শিল্পে চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি করবে, যা মালিক ও সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদের দেয়াল তৈরি করবে। এর সূত্র ধরে পুরো সংবাদপত্র শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

নেতারা বলেন, কোরবানির ঈদের আগে সাংবাদিকরা স্বাভাবিকভাবেই আশা করেছিলেন নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ অনুযায়ী বেতন ও বোনাস পাবেন। কিন্তু নোয়াব মামলা করে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীদের মহার্ঘভাতাও না দেয়ার হীন অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

তারা বলেন, ওয়েজ বোর্ড শুধু সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার ভাউচার নয়, এটি সংবাদপত্র শিল্পের একমাত্র আইন। ভবিষ্যতে এ আইনকে ভিত্তি করেই গণমাধ্যম আইন পাস হবে। সুতরাং সংবাদপত্র প্রকাশ করতে হলে আইন মানতেই হবে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ড-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ার পরও নোয়াবের হাইকোর্টে রিট করা উদ্দেশ্যমূলক। সেই বৈঠকে নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশক মতিউর রহমান এবং সহ-সভাপতি ও সমকালের প্রকাশক একে আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তারপরও এ ধরনের রিট করে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা দুপক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করবে।

নেতারা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, নোয়াবের উদ্দেশ্য এ দেশের সাংবাদিক সমাজ কোনো দিন সফল হতে দেবে না। তারা অবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ডের রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আরও বলেন, সংসদের চলতি অধিবেশনে অবশ্যই গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস করতে হবে।

বর্তমানে সংবাদপত্রে ঢালাওভাবে ছাঁটাইয়ের বিষয় উল্লেখ করে তারা বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে একশ্রেণির দালাল সৃষ্টি করে মালিক পক্ষ ঢালাওভাবে গণমাধ্যমে ছাঁটাই শুরু করেছে।

দালালদের সতর্ক করে নেতারা বলেন, সাময়িক সুবিধার লোভে যেসব দালাল সাংবাদিকদের পেটে লাথি মারছেন তারাও একদিন মালিকপক্ষের কাছ থেকে ওই ধরনের আচরণ পাবেন নিশ্চিতভাবে। সেই সঙ্গে সাংবাদিকরাও তাদের ছেড়ে দেবেন না।

বিএফইউজে নেতারা বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তার সদিচ্ছা ও নির্দেশে দীর্ঘদিন পর নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছিল। তার আন্তরিকতায়ই মহার্ঘভাতার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। তারই নির্দেশে গণমাধ্যমকর্মী আইন চূড়ান্ত হয়ে সংসদে পাসের অপেক্ষায়। অথচ চিহ্নিত একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে মিডিয়ায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে হীনস্বার্থ হাসিল করতেই নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে নানা ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। নেতারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনুদ্দিন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবীর, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নেয়ামুল হোসেন কচি, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রুবেল, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জিএম রউফ, ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আতাউল করীম খোকন, সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিলন উল্লাহ।

নোয়াবের রিটের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএফইউজে। একই সঙ্গে সারা দেশে অঙ্গ ইউনিয়নগুলোও বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।

106 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন