২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

রোহিঙ্গা স্থানান্তরে জাতিসংঘের বিরোধিতা নেই

আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০১৯

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্র। ফাইল ছবি
বিজয় নিউজ::  রোহিঙ্গা স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, এ জন্য জাতিসংঘের একটি টেকনিক্যাল টিমও কাজ করছে। তারা খুব শিগগিরই সেখানে যাবেন। ভাসানচর নিয়ে জাতিসংঘ বিরোধিতা করছে, এটা ঠিক নয়।

সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ সব কথা বলেন। এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ডিপ্লোম্যাটিক রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিক্যাব)।

পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে গাম্বিয়া। গাম্বিয়া তাদের বিরুদ্ধে লড়বে। সেখানের কোর্টে বাংলাদেশের লড়ার সুযোগ নেই।

আইসিসিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধাগ্রস্ত হবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে কাজ করছে। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে জাতিসংঘেও এ নিয়ে বক্তব্যও রেখেছেন। মিয়ানমার তখন থেকেই জানে আমরা দু’টি ফ্রন্টে কাজ করছি। এটা একটা অন্যের পরিপূরক। তাই এ নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গারা এর আগেও এসেছেন। ফিরেও গেছেন। তবে আমরা টেকসই প্রত্যাবর্তন চাই, যেন আরা তারা ফিরে না আসেন। সে কারণেই জবাবদিহিতা ও প্রত্যাবর্তন উভয়ই জরুরি।

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরাণ দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সব ব্যবস্থাই ভাসানচরে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে গেলে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্প জীবনের চেয়ে ভালো থাকবে তারা। তবে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সম্প্রতি ওই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও তারা বলেছেন, স্থানান্তরের বিষয়টি অবশ্যই রোহিঙ্গাদের সম্মতির ভিত্তিতে হতে হবে।

জাতিসংঘের দল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই মাসের মধ্যে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ওয়েদার রিলেটেড একটা প্রশ্ন আছে। আপনারা জানেন, মাঝখানে ওয়েদার একটু প্রতিকূল হয়ে গেছিল, সেটা বোধ হয় এখন অনুকূল হয়েছে।

শহীদুল হক বলেন, টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, তারা কম্পোজিশান দিয়েছেন, কী দেখতে চান, আমরা মোটামুটি এই জিনিসটা এগিয়ে এনেছি।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার- দুটি ’অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, কারণ এর আগেও রিপ্যাট্রিয়েশন হয়েছে, ১৯৭৭-৭৮-এ হয়েছে, নব্বইয়ের প্রথম দিকে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন একই রোহিঙ্গারা, তারা গেছেন এবং ফিরে এসেছেন। সুতরাং তাদের এই প্রত্যাবর্তনটা যাতে টেকসই হয়, আর ফিরে না আসে, তার জন্য অ্যাকাউন্টেবিলিটি ইজ ক্রিটিক্যাল। বিচার ও ফিরে যাওয়া একটা আরেকটার পরিপূরক।

মিয়ানমারের বিচারে বাংলাদেশের তৎপরতা রোহিঙ্গা সংকটের দ্বিপাক্ষিক সমাধান চেষ্টাকে ব্যাহত করবে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের যে পলিসি, এটা মিক্সড অব বায়লেটারাল অ্যান্ড মাল্টিলেটারাল।

96 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন