১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

ঢাকার ২ সিটিতে ব্যালটে ভোট চেয়ে ইসিকে বিএনপির চিঠি

আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২০

বিজয় নিউজ:: দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটি নিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে যান বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করে চিঠিটি পৌঁছে দেয় প্রতিনিধিদল।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‌গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম ৮ এর উপ-নির্বাচনের চিত্র বিস্তারিত তথ্যসহ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যা আপনারাও অবগত আছেন বলে মনে করি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই চিত্র ইভিএম, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সম্পর্কে বিএনপিসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক দাবিকে আরও পাকাপোক্ত করেছে।

সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি ইভিএম সম্পর্কে আমাদের দলের বক্তব্য এবং দাবি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিকে অবগত করেছি। ৬ জানুয়ারি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দুই মেয়র প্রার্থীসহ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি দাবিনামা আপনাদেরকে (নির্বাচন কমিশন) পেশ করেছেন।

সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-৮ উপ-নির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে এই চিঠি আবারও আপনাদের কাছে পেশ করছি। একটি স্বচ্ছ ও শুদ্ধ নির্বাচন ব্যবস্থা ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অর্থহীন। গণতন্ত্র কার্যকরী করার জন্যই ওই ভোট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের সংবিধান নির্বাচন কমিশনের মতো একটি প্রতিষ্ঠান জন্ম দিয়েছে।

ইভিএম প্রকল্পের মতো একটি সর্বজন বিতর্কিত উদ্যোগ সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। ইতিমধ্যেই ইভিএমের যান্ত্রিক অকার্যকারিতা যেমন প্রমাণিত হয়েছে তেমনি নির্বাচন কমিশনকে সহযাগী অথবা নিষ্ক্রিয় রেখে কাগজের ব্যালট ছিনতাই বা ডাকাতির মতোই ইভিএমের ওপরও সরকারদলীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ও ভোটারদের দেদারছে সরকারদলীয় বাহিনীরা দখল করেছে।

অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন যার সর্বশেষ প্রমাণ। নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী আবু সুফিয়ান ইতিমধ্যেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে প্রচলিত ব্যালট ব্যবস্থায় পুনরায় একটি অবাধ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আপনার বরাবর দাবি করেছেন।

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের বিশেষজ্ঞরা সাংবাদিকদেরকে ইভিএম মেশিনের কার্যকারিতা প্রমাণে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) দুটি ইউনিট। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। এরমধ্যে ব্যালট ইউনিটটি অরক্ষিত। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট দিতে পারেন অন্যজন।

কেননা, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গারের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যালট ইউনিটে তা নেই, সেখানে সাংবাদিকরাই তা প্রমাণ করেন। যা প্রমাণিত হলে

চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে এমনকি তৃতীয় পক্ষ দিয়ে নিরীক্ষিত ইভিএমও যদি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ গ্রহণ করেন সেই যন্ত্র নিয়ন্ত্রণকারীরাই চূড়ান্তভাবে ভোট দেয়ার ক্ষমতা পাবেন।

অতএব, নির্বাচন কমিশন যতক্ষণ একটি স্বচ্ছ, শুদ্ধ ও ভোটারের গোপনীয়তাসহ ভোটাধিকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করতে পারবেন ততক্ষণই ভোটাধিকার চর্চা থেকে ভোটের মালিক তথা রাষ্ট্রের মালিক জনগণ বঞ্চিত থাকবেন।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের হাতে এখনও সুযোগ আছে নিরপেক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই উন্মোচিত ইভিএমের অকার্যকারিতাকে বিবেচনায় নিয়ে ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করে প্রচলিত ব্যালট ব্যবস্থাতেই ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করুন।

ভোট প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের খবরদারি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আশা করি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা প্রমাণে আমাদের উল্লেখিত দাবি পূরণ করে ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ করার ব্যবস্থা নেবেন।’

91 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন