আপডেট: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫

প্রতীকি ছবি
বিজয় নিউজ :: হিজলায় কৃষকের সারে আগুন। সার গোডাউনে প্রশাসনের হানা। বিসিআইসিসার ডিলারের জরিমান। ক্ষুদ্র সারডিলার কাঁদছে নিরবে। কৃষক পরিবারে হাহাকার। সারের অভাবে তরমুজ চাষী পালিয়েছে।
কৃষকের সারে মানছে না বাজার নীতিমালা। মনগড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সার। ১০৫০ টাকার স্যার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকায়। কোথাও ১৬০০ টাকা। প্রশাসনে নীরবতা।
দীর্ঘদিন যাবত হিজলা উপজেলায় সার নিয়ে কেলেঙ্কারি চলে আসছে। ৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইলিয়াস সিকদার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হাবিব আল জনি সহ একটি দল উপজেলার কাউড়িয়া বাজারে সারের গোডাউনে হামলা চালায়। এ সময় বিসিআইসি ডিলার হারুন ফকিরের দোকানে অতিরিক্ত দামে স্যার বিক্রি করায় ৩০০০০ টাকা জরিমানা প্রদান করে।

প্রতীকি ছবি
মৌসুমের শুরুতেই কৃষকের মাথায় হাত। সার নিয়ে তেলেসমতি। শত শতক কৃষকের সারের জন্য হাহাকার। হিজলা উপজেলা থেকে সার উধাও। কৃষি অফিস বলছে সারের সংকট নেই। উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হচ্ছে । চাষীদের চোখে মুখে হতাশ।
হিজলা উপজেলায় চলমান বছরে কয়েক শত হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হচ্ছে। সারের অভাবে কৃষকের হাহাকার। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড় জালিয়ার চরে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে তরমুজ। হিজলা উপজেলার সদর সংলগ্ন বাউসিয়ার চরে কয়েক শত শত একর জমিতে চাষ হচ্ছে তরমুজ। চাষিরা দিশেহারা। সার নেই!
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বিসিআইসির সারের ডিলারের সংখ্যা চারজন। এদের মধ্যে কাউড়িয়া বন্দরে রয়েছে হারুন স্টোর। তিনি বলছেন চাহিদা মোতাবেক সার নেই।
মেয়েমানিয়া ইউনিয়নে রয়েছে আর একটি ডিলারশিপ (মাসুদ আলম ট্রেডার্স)। তিনি অনুপস্থিত। নোমান ঢালী, থাকার কথা মেয়েমানিয়ায়। তার দোকান রয়েছে হরিনাথপুর বন্দরে। গোডাউন শুন্য।
নদিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের আরেকজন ডিলার রয়েছেন বড় জালিয়া ইউনিয়নের পুরাতন হিজলা বন্দরে। সার নেই তার গুদামে। বেলাল জমাদারের দাবি, সার চলেনা তাই উত্তোলন করেন না।
দুলখোলা ইউনিয়নে রয়েছে লুৎফর দপ্তরি নামের এক ব্যক্তি। উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন বিচ্ছিন্ন এলাকায়। খোঁজ নেওয়া যায়নি তার।
২০২৫ সালের অক্টোবর মাস, নভেম্বর মাস এবং ডিসেম্বর মাস। তিন মাসে যথারীতি হিজলা উপজেলার নামে বরাদ্দ রয়েছে সার। বাস্তবতা ভিন্ন।কি পরিমান বরাদ্দ তা জানে না ক্ষুদ্র ডিলাররা। সার নেই হিজলা উপজেলায়। ডিলার দাবি করছে চাহিদা ও কম। তবে চাষীদের চাহিদার সময় সার নেই গোডাউনে। এমন দাবি কৃষক ও ক্ষুদ্র ডিলারদের। কিছু সার পাওয়া গেল তা সরকারি তালিকার চেয়ে মূল্য অনেক বেশি।
অপরদিকে হিজলা উপজেলায় তরমুজ চাষ করতে আসা কৃষক, কেমন হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, আলম গাজী, ফজলুমৃধা, সোহেল, তসলিম, কুদ্দুস, আলাউদ্দিন, সহ পটুয়াখালী, বাউফল ও ভোলা থেকে আসা চাষিরা সােরর জন্য দিশেহারা।
উপজেলার কোথাও সার পাচ্ছে না তারা। নামকাওয়াস্তে পেলেও দাম বেশি। বস্তা প্রতি সরকারি দামের চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি। আবার কখনো খালি হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে তাদের। ইতোমধ্যে সারের অভাবে বেশ কিছু কৃষক হিজলা ছেড়ে চলে গেছে।
এত সার গেল কই ?
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র দাবি করছে, ডিসেম্বর মাসে উপজেলায় সারের বরাদ্দের পরিমাণ ইউরিয়া ১৯৩ টন, ডিএসপি ১৫০ টন, ড্যাপ ১৫০ টন, এমওপি ৭০ টন। তবে হারুন স্টোর ছাড়া অন্য কোন ডিলারের স্যার নেই গোডাউনে। এ বিষয়ে প্রশাসন নিরব।
উপজেলা কৃষি অফিসার আহসানুল হাবিব আল জনি বলছে, ইউরিয়া, টিএসপি, ড্যাপ, এমওপি সকল সার জেলা থেকে উপজেলার বিপরীতে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। সারের সংকট নেই। সার পাচ্ছেন না চাষিরা। এটা মিথ্যা।
স্থানীয় ক্ষুদ্র ডিলার হারুন বেপারী, ইসমাইল হোসেন, সেলিম হাওলাদার, আব্দুল্লাহ বিন কালাম, শহিদুল ইসলাম, মোস্তফা বেপারীদের অভিযোগ, রীতিমতো সার তুলতে গেলে সার পান না তারা। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দাম নেন বিসিআইসি ডিলার হারুন। ডিলারের মন মতো দাম ধরা। সময় মত সার সরবরাহ না করা। অনিহায় এখন ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছি।
ভোলা, চরফ্যাশন, পটুয়াখালী, বাউফল থেকে আসা একাধিক তরমুজ চাষী জানান, ইতিমধ্যে হিজলা উপজেলার বিভিন্ন সারের দোকানে ঘুরে সার পাচ্ছিলাম না। দুই এক বস্তা পেলেও দাম অনেক বেশি। ইতোমধ্যে সারেরর অভাবে কিছু চাষী অন্যত্র চলে গেছে।