আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২৪
বিষেশ প্রতিনিধি : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আজিমপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ রতন মোল্লাহর প্রায় দেড় একর জমির সুপারীর বাগান চলতি মৌসুমে বিক্রি করেছেন মাত্র ৩০ হাজার টাকায়। যা গতবছর মৌসুমে বিক্রি করে ছিলেন ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়। তার দাবী ফলন গত বছরের তুলনায় খুবই খারাপ হয়েছে।
সুপারীর রাজধানী ক্ষ্যাত জেলার হিজলা উপজেলার কাউরিয়া গ্রামের বাগান মালিক সৈয়দ আহসান হাবিব বলেন, গতবছর তার বাগান থেকে ৮০ হাজার টাকার সুপারী বিক্রি করলেও এবছর বিক্রি করেছেন মাত্র ২০ হাজার টাকার সুপারী। তার মতে গত বছরের তুলনায় এবছর বর্ষা বেশি হওয়ায় ফলন কম হয়েছে। এর বাইরে বাগানে বা গাছের কোন সমস্যা চোখে পরেনি।
তবে বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের সাথে বাগান মালিক ও কৃষকদের দেওয়া তথ্যের কোন মিল পাওয়া যায়নি। আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন আরো ভালো হয়েছে। তারা মাঠের তথ্য সংগ্রহ করেন কিভাবে তার সঠিক ব্যাক্ষা দিতে পারেননি। তারা বলছেন, জেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের প্রেরিত তথ্য মিলিয়ে এই রিপোর্ট তৈরি করে মন্ত্রনালয়ে পাঠান। আর বাগান মালিক বা কৃষক বলেন কোন কর্মকর্তাই তাদের কাছে যায়না পরামর্শ বা তথ্য আনতে।
আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায় গতবছর সুপারীর মৌসুমে বরিশাল বিভাগে ১৭০৬৯.৫ হেক্টর জমির বাগানে ১৩৬৬৮৭.৪ মেট্রিকটন সুপরী উৎপাদন হয়েছিল। সেখানে এবছর চলতি মৌসুমে ১৭৭৮৮হেক্টর জমির বাগানে সুপারী উৎপাদন হয়েছে ১৮০৭০৭ মেট্রিকটন। জমির হিসেবে গত বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৮ মেট্রিকটন। এবছর চলতি মৌসুমে হেক্টটর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ১০ মেট্রিক টন।
এই হিসেব কে সম্পুর্ন টেবিল আর কাগুজে হিসেব বলে আক্ষায়িত করেছেন সুপারী বাগান মালিক সৈয়দ আহসান হাবিবসহ অনেকে। দাতের দাবী গত ১০ বছরে উপজেলার কোন কৃষি কর্মকর্তা বাগানের জমির পরিমান বা সুপারী উৎপাদনের হিসেব নিতে তাদের সাথে কথা বলেননি। জেলার মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, বাবুগঞ্জসহ ১০ উপজেলার একাধিক বাগান মালিকের বক্তব্য আজগুবি কাগুজে হিসেব দিয়ে আসছে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। মুলাদীর তেরচর গ্রামের সুপারীর বাগান মালিক নবিন মল্লিক বলেন, আমার জন্মের পর থেকেই দেখছি আমাদের ৩ একর জমির সুপারীর বাগান। এবছরই ফলন একটু কম হয়েছে। কোন দিন কোন কৃষি কর্মকর্তা আমাদের বাগানের পরিমান বা ফলনের পরিমান জানেেত আসেনি। তার বাগানে পুরাতন গাছের পাশা পাশি এবছর আরো নতুন গাছেও সুপারী ধরেছে। তার পরও গত মৌসুমের অর্ধেক ফলনও হয়নি এবছর।
এবিষয়ে তথ্য দাতা বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের প্রধান সহকারী গোলাম মোস্তফা বলেন, জেলা ও উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্যেও ভিত্তিতেই আমরা রিপোর্ট তৈরি করি যা অধিদপ্তরে প্রেরন করা হয়। এর বাইরে তার কাছে কোন তথ্য নেই। এখন উপজেলা ও জেলা কৃষি কর্মকর্তারা কি ভাবে তথ্য সংগ্রহ করে তা তার জানা নাই।
বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সিকদার অতি বৃষ্টির কারনে বরিশাল বিভাগে সুপারীর ফলন কম হয়েছে স্বিকার করে বলেন, এধরনের রিপোর্ট কেন কোথায় পেয়েছে তা জেলা কর্মকর্তাদের কাছে যানতে চাওয়া হবে। তার পর বিষটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ###