২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার এখন লাইফ সাপোর্টে

আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৩

বিজয় নিউজ:;রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট বৈশিক সংকট এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও অস্থিরতায় এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের শেয়ারবাজারে মন্দাভাব চলছে। দরপতনের বৃত্তে পড়ে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘লাইফ সাপোর্ট’র সঙ্গে তুলনা করছেন বরিশালের বিনিয়োগকারীরা।

তারা বলছেন, শেয়ারবাজার এখন লাইফ সাপোর্টে। যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। হয় তো ভেতরে ভেতরে মৃত্যু হয়েছে কি না সন্দেহ!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পর থেকেই অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে বরিশালে অবস্থিত সাতটি ব্রোকারেজ হাউজের শাখা অফিস। হাউজগুলোর দায়িত্বরতরা জানান, আগে যখন শেয়ারবাজারের অবস্থা ভালো ছিল তখন প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এখন সেই লেনদেন কমে দাঁড়িয়েছে ৩ থেকে ৪শ’ কোটি টাকায়।

ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডে বিনিয়োগকারী জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই জেদ করে বসে আছি শেয়ারবাজার ভালো হবে এই আশায়। কিন্তু এখন দেখছি ঠিক উল্টো। শুধু দরপতনই চলছে। লাভের মুখ আর দেখতে পারছি না।

ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের আরেক বিনিয়োগকারী নগরীর আলেকান্দা এলাকার আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজার এখন যে অবস্থায় আছে তাতে মনে হয় লাইফ সাপোর্টে আছে। যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। ভেতরে ভেতরে মৃত্যু হয়েছে কি না তাও সন্দেহ।

তিনি আরও বলেন, দরপতনের পর থেকে আমরা শেষ কবে লাভের মুখ দেখছি তা ঠিক মনে নেই। চলমান এ পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় ফকির হয়ে বসে আছি।

লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বিনিয়োগকারী মঈন উদ্দিন বলেন, টানা দরপতনের কারণে আমাদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হচ্ছেন। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

প্রায় একই কথা বলেন বরিশালের আইসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড, আল-আরাফাহ ব্রোকারেজ লিমিটেড, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, স্টক অ্যান্ড বন্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও এম সিকিউরিটিজ লিমিটেডের একাধিক বিনিয়োগকারী।

লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বরিশাল হাউজের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শেয়ারবাজারে দরপতনের ফলে বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বরিশালের সব স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউজ। চলমান দরপতনে ছোটবড় সব ব্রোকারেজ হাউজই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অফিসের খরচ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতেই হিমশিম অবস্থা।

বরিশালের ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের ইনচার্জ মহসিন উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন চলছে। ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় চললেও হাউজগুলোর খরচ থেমে নেই।

তিনি আরও বলেন, বছরের তিন-চার মাস মোটামুটি মার্কেট ভালো থাকলেও বাকি সময় খারাপ যায়। যেমন কয়েকদিন ধরে দরপতনের ফলে এখন কোনো ট্রেড নেই বললেই চলে। তাছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পর থেকেই কোম্পানিগুলো লোকসানে রয়েছে। এ অবস্থায় কোম্পানি যদি ক্ষতিগ্রস্ত থাকে তাহলে বিনিয়োগকারীদের লাভ দেবে কীভাবে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ডলার সংকটই শেয়ারবাজারে দরপতনের মূল কারণ।

89 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন