২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বিদ্যমান আইনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা, ইইউ প্রতিনিধিদের যা জানালেন আইন সচিব

আপডেট: জুলাই ১২, ২০২৩

বিজয় নিউজ:: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল তাদের সফরের চতুর্থ দিনে বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেছে। তারা আইন সচিবের কাছে জানতে চেয়েছে- বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব কিনা।

নির্বাচনের কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে গণপ্রতিনিধিত্ব আধ্যাদেশ সংশোধন করা হলো। এই সংশোধনীর ফলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বেড়েছে না কমেছে। তারা তা-ও জানতে চেয়েছেন। এ ছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সংশোধন করা হচ্ছে কিনা, সেটিও জানতে চেয়েছে।

ইইউ প্রতিনিধি দলে ছিলেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষক রিকোর্ডো চেলেরি, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি আইওনাও এবং আইন বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিনা ডোস রামোস আলভেস।

পরে আইন সচিব গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের আইনগত কাঠামো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট কিনা- সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। আমরা বলেছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার জন্য আমাদের দেশের যে আইনগত কাঠামো আছে, সেটাই যথেষ্ট।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পাশ হয়েছে, সেখানে ৯১ (এ) ধারায় নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তারপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯১ (এ)(এ) ধারা যুক্ত করে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার ব্যবস্থা করেছেন। এতে তারা (ইইউ প্রতিনিধিরা) সন্তুষ্ট হয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে আইন হয়েছে, এই উপমহাদেশে এমন আর কোনো আইন নেই। আমরা বলেছি, সার্চ কমিটির যে ফরমেশন আছে, সেখানে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, যিনি প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে মনোনীত হবেন। এ ছাড়া মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং দুজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যাদের একজন নারী থাকবেন। ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের কাছে আমরা আইনও দিয়েছি। এ বিষয়ে তারা আমাদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পেয়েছেন।

দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এমন কোনো আলোচনা হয়নি।

বিচার বিভাগ স্বাধীন উল্লে­খ করে তিনি বলেন, ২০০৭ সালের নভেম্বরে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পরে যখন নির্বাচন কমিশন আমাদের একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চায় যেটা আরপিও ৯১(এ) ধারায় আছে সেক্ষেত্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য চাহিদা দেওয়া হলে আমরা সুপ্রিমকোর্টের সম্মতি নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্বাচন কমিশনে ন্যস্ত করি। এরপর তারা নির্বাচন কমিশনের অধীন চলে যায়। সবকিছু নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে তারা করেন। অর্থাৎ নির্বাচনের আগের ও পরের দুদিন এবং নির্বাচনের দিন এই পাঁচ দিন তারা ইসির অধীন দায়িত্ব পালন করেন। তখন নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে তারা সামারি ট্রায়াল করেন। আরপিওর বিধান অনুসারে তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এই বিধানের তারিফ করেছেন ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা।

তারা কোনো পর্যবেক্ষণ দিয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন- একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই আইনটা যথেষ্ট কিনা। আমরা বলেছি, হ্যাঁ। আমাদের যে ম্যাকানিজম আছে, সেটা যথেষ্ট। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্য কিছু করার দরকার নেই। আরপিও নিয়ে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের কোনো পর্যবেক্ষণ ছিল কিনা- জানতে চাইলে আইন সচিব বলেন, আমাদের আইনগত কাঠামোর কথা তাদের বলেছি

76 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন