২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

মেঘনার ভাঙ্গনে হুমকীতে হিজলা উপজেলা,নদী ভাঙ্গা অবহেলিতের পাশে হিজলার মুক্তি যোদ্ধা

আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২০

স্থানীয় পুরাতন হিজলা বন্দরে আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার হোসেন, তোফাজ্জল হক খোকা চৌধুরী এবং কাজী কবির উদ্দিন।
সাইফুল ইসলাম:: বহুল প্রতিক্ষার দিনক্ষণ শেষ- হিজলা রক্ষা কর-মেঘনায় তলাচ্ছে একের পর এক গ্রাম। এখন বাস্তবায়নের পালা। এই পালা বদলে হাত বাড়ালেন মুক্তিযুদ্ধের তিন বীর সন্তান- মুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ তোফাজ্জল হক খোকা চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা কাজী করির উদ্দিন করিব কাজী। ২৬ জানুয়ারী পুরাতন হিজলা বাজারে সকাল ১০টার দিকে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধকরণ সভার মাধ্যমে হিজলার বাউশিয়ার মেঘনা পার রক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন।
সানোয়ার হোসেন বলেন-আপনাদের যা কিছু আছে একটু সহযোগিতার হাত বাড়ান। মুক্তিযুদ্ধে যে ভাবে দেশ স্বাধীন করেছি- এবার আপনাদের সহযোগিতায় বাউশিয়া, বাহেরচর, লক্ষীপুর সর্বপরি হিজলা উপজেলা রক্ষা করি। যার যা আছে প্রত্যেকে তার সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়ান। যদি পারেন একটি ইট দান করেন। দেখি আমরা আমাদের রক্ষা করতে পারি কি না। হাজারও জনতা তাদের এ কথাকে স্বাগত জানান। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপ¯ি’ত ছিলেন এ্যাডঃ তোফাজ্জল হক খোকা চৌধুরী, কাজী কবির উদ্দন কবির কাজী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন হাওলাদার, আলী রাজামীর, মাষ্টার রফিকুল ইসলাম, রফিক খান, বড়জালিয়া ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান শাহানশাহ শামু চৌধুরী, জন্টু হাওলাদার, জাকির শিকদার, সাইফুল ইসলামসহ হাজার হাজার জনতা।
এ্যাঃড খোকা চৌধুরী জানান- সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ের প্রয়োজন। ইতোমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা থাকবে-তার পাশাপাশি নিজের বাড়ি নিজের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য প্রথমে আমাদে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের কোন দল নেই, আমাদেও কোন মত নেই। আমরা সকল শ্রেনী পেষার মানুষের সাথে মিলে মিশে কাজ করতে চাই। আমরা এমপির সহযোগতাও চাই। আসুন মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনের মতো কাধে কাধ মিলিয়ে হিজলা রক্ষা করি।

দিন ক্ষণ শেষ এখন আবার আসছে বান-শঙ্কা-ভয়-কখন বসত ভিটা খয়ে যায় রাক্ষুশী মেঘনার পেটে। অসহায়ের মতো তাকিয়ে মেঘনা পারের বাউশিয়া এবং বাহেরচর গ্রামের হাজারও পরিবার। বছরের পর বছর আশ্বাস-বিশ্বাস-ভরষার অবষান ঘটাতে যাচ্ছে হিজলা উপজেলার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: তোফাজ্জল হক খোকা চৌধুরী এবং মুক্তিযোদ্ধা সানোয়ার হোসেন। মা -মাটি আর মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এরা এখন অবহেলিত হিজলাবাসীর পাশে দাড়াতে যাচ্ছেন। আজ রবিবার হিজলার ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাউশিয়া, বাহেরচর সর্বপরি হিজলা উপজেলাকে রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে তাঁদের পাশে দাড়াতে যা”েছন।

ভাঙ্গনের মুখে হিজলা উপজেলা। নরিয়ার দশা অপেক্ষা করছে এখানে। যে কোন মুহুর্তে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে বরিশালের হিজলা উপজেলা সদর। নরিয়ার পরিনতি অপেক্ষা করছে এখানে। গেল বর্ষায় মাত্র দুই দিনে ১৫০টি পরিবার নদীর গর্ভে বিলী হয়েছে। আমাবশ্যার যোয়ারের সাথে সাথে ভাঙ্গন বৃদ্ধি পা”েছ। এষনও থেমে থেমে ভাঙছে বসতি। হতাশায় শত শত পরিবার।
নামকাওয়াস্তে ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ দিয়েও পারপাচ্ছেন না বাউশিয়া-বাহেরচর বাসি। বিগত বছরে সরকার দেয়া ৬ হাজার বস্তা জিওব্যাগ ফেললেও তা খুবই নগন্য বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা। তাদের মতে এটি ¯’ানীয় জনগনের সাথে সরকারের প্রতিনিধিদের চালাকী। বছরের পর বছর আশ্বাস আর আশ্বাসের দোলাচালে হতাশায় বাউশিয়াবাসী। ভরসায় হারা”েছ একের পর এক বাড়ি, ফসলি জমি, গ্রাম সর্বপরি হুমকীর মুখে হিজলা উপজেলা সদর।
হিজলা উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১ শত গজ দুরে প্রমত্তা মেঘনার শাখা নদী। এখান দিয়ে হাজার হাজার লঞ্চ কার্গোর যাতায়াত ঢাকা, চাঁদপুর, চট্রগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, যশোর সহ দেশের ভিভিন্ন এলাকায়। পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ চ্যানেলটির গুরুত্ব ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে এ চ্যানেল ছাড়া অভ্যন্তরীন ও বিদেশের সাথে জলপথে পণ্য যোগাযোগের মাধ্য হিসাবে এটি জাতীয় ক্ষেত্রে অপরিসিম হয়ে দাড়িয়েছে। সেই সাথে ভাঙ্গছে হিজলার জনবহুল গ্রাম উল্টর, দক্ষিণ বাউশিয়া এবং বাহেরচর গ্রাম। অসহায় শত শত পরিবার। দির্ঘ দিন যাবত ভাঙছে পার্শ্ববর্তী গ্রাম বাউশিয়া। ১৯৯৬ সালে এ গ্রামে ভোটার সংখ্যা ছিল ৬ হাজার। ২০০০ সালের দিকে তা কমে দাড়িয়েছে ৪ হাজারে। এর পর কমতে কমতে শুণ্যর কোঠায় চলে অসছে। বর্তমানে বাউশিয়ার মানচিত্র বলতে শত পরিবারের একটি প্রতিকী গ্রাম। এর পরে বাহেরচর গ্রামও ভাঙতে শুরু করেছে। হাজার হাজার পরিবার ভাঙ্গনে গ্রাম ছাড়া। হাতাশার মধ্যে উপজেলা সদরের সাধারণ মানুষ ও সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
বর্তমানে হিজলা উপজেলা প্রশাসনিক ভবণ থেকে নদীর দুরত্ব মাত্র ১ শত গজ। সামনে আসছে বর্ষা যে কোন মুহুর্তে বিলীন হতে পারে উপজেলাটি। সময় থাকতে উপজেলা রক্ষার জন্য জোর দাবি স্থানীয় অসহায় সাধারণ মানুষের। এখানকার জনগনের দশা যেন নরিয়ার মতো না হয়। বর্তমানে হিজলাবাসীর ভরসার কান্ডারী হয়ে দাড়াচ্ছেছন হিজলা উপজেলার তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃতি সন্তান তোফাজ্জল হক খোকা চৌধুরী, সানোয়ার হোসেন, কাজী কবির উদ্দিন কবির কাজী। মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ তোফ্জাল হক খোকা চেšধুরী এবং সানোয়ার হোসেন জানান হিজলা তথা বাহেরচ এবং বড়জালিয়া গ্রামে তাদের বাড়ি। হিজলা উপজেলাবাসীর কাছে দায়বদ্ধতা আছে- সেখান থেকে একটু এলাকাবাসীর সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন সানোয়ার- খোকা-কবির কাজি।

 

140 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন