যশোরের মনিরামপুরে ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হওয়া এক কিশোরী (১২) একটি ছেলের জন্ম দিয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানটিকে ভূমিষ্ট করা হয়।

সন্তান সুস্থ থাকলেও কিশোরী মায়ের অবস্থা ক্রিটিক্যাল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মনিরামপুরে উপজেলা পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহকারী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার ‘ধর্ষণের শিকার’ হয়ে মেয়েটি ৮ মাস আগে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৪ সেপ্টেম্বর তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন ছিল আগামী ১৭ অক্টোবর। মেয়েটি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৪ সেপ্টেম্বর তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শুক্রবার রাতে তার প্রসব বেদনা উঠলে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল সার্জন ডা. নিলুফার ইয়াসমিন তার সিজারিয়ান অপারেশন করান। সঙ্গে ছিলেন ডা. রবিউল ইসলাম ও ডা. মাহবুবুর রহমান।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানিয়েছেন, সিজারিয়ান অপারেশনের পর বাচ্চাটি সুস্থ থাকলেও মায়ের অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’। তবে মা ও ছেলে হাসপাতালের চিকিৎসক টিমের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আছে। তাদের সুস্থ রাখতে চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ ও পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু মা ও ছেলের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। চিকিৎসার যাবতীয় খরচ তারা বহনের উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি এটির সঙ্গে যেহেতু ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে, এ কারণে মা ও বাচ্চাটির নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মেয়েটির স্বজনরা জানিয়েছেন, মনিরামপুরে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের উপজেলার সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে গোলাম কিবরিয়া একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। এ জন্য তার বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে ওই কিশোরী থাকতেন।

চলতি বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন কিবরিয়া। এ সময় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

বিষয়টি জানতে পেরে কিশোরীর স্বজনরা আইনের আশ্রয় নেন। তখন পুলিশ কিবরিয়াকে আটক করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। আর মামলাটি বিচারাধীন। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েটি এই সন্তান প্রসব করল।