২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

হিজলায় কৃষককে আটকে টাকা ও সাদাকাগজে স্বাক্ষর নিল পুলিশ

আপডেট: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ বরিশালের হিজলায় বাজার থেকে তুলে নিয়ে এক কৃষককে পুলিশ ক্যাম্পে আটকে অর্থের বিনিময়ে রফাদফার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সোহাগের বিরুদ্ধে।
গত রোববার দুপুরে উপজেলার হরিনাথপুর বাজার থেকে কৃষক দুলাল সরদারকে তুলে নিয়ে পাশ্ববর্তী পুলিশ ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়।
পরে ওই কৃষকের শ্যালক এসে এসআই সোহাগের হাতে চার হাজার টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আসামী করা হবে এমন হুমকি দিয়ে কৃষক দুলাল সরদারের কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
তবে পুলিশের উপপরিদর্শক সোহাগ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, দুলাল সরদারকে ক্যাম্পে এনে তার জিম্মায় রাখা ধানের ফয়সালা করার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। টাকা গ্রহণের বিষয়টি মিথ্যা।
কৃষক দুলাল সরদার জানান, হরিনাথপুর ইউনিয়নের কোলচর পাতারচর মৌজার বেশ কিছু জমি গত কয়েকবছর যাবত মালিকদের কাছ থেকে খাজনা হিসেবে চাষাবাদ করে আসছি। কিন্তু গত ৬ আগষ্টের পর কিছু আওয়ামীলীগ সমর্থক হঠাৎ বিএনপি সেঁজে আমার লাগানো জমির আমন ধান কেটে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
গত ২০১২-১৩ সালে সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্তের মাধ্যমে মালিক হওয়া জমির মালিক মোস্তফা বেপারী, আবুল হোসেন খান, শরিয়ত উল্লাহ বেপারী সহ অন্যান্য মালিকদের উচ্ছেদ করে দখল করতে চায় এনায়েত বেপারী, আ. রহিম বেপারী, মতি বেপারী, খালেক সরদার ও মামুন সরদার। জমির মালিকদের প্রতিরোধে তারা পেরে উঠতে না পারায় সহযোগী হিসেবে বর্তমানে তাদের সাথে মাঠে নেমেছে হিজলা উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক ও হরিনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক মাঝির ভাই ছত্তার মাঝি।
জানা গেছে, ছত্তার মাঝির সাথে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহাগের সাথে ৫ আগষ্টের পর বেশ সখ্যতা গড়ে ওঠায় বর্তমানে তারা দুজনে একে অপরের পরিপুরক হয়ে হরিনাথপুরের জলে-স্থলে সকল ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, ছত্তার মাঝির ইশরায় কৃষক দুলাল সরদারকে বিনা অভিযোগে এসআই সোহাগ ফাঁড়িতে আটকে চার হাজার টাকা আদায় করেন। এখন ভয়ে কৃষক এলাকা ছাড়া। এলাকায় গেলে তাকে তার চাষাবাদে অর্জিত ধান অথবা সমপরিমান টাকা এসআই সোহাগের হাতে তুলে দিতে হবে।
এদিকে কৃষক দুলালকে আটকে টাকা আদায় ও সাদা কাগজে স্বাক্ষরের বিষয়ে জানার জন্য এসআই সোহাগের সাথে ফোনে কথা বলার একঘন্টা পর প্রতিবেদকের মোবাইলে ফোন করে জমি দখল ও ধান কেড়ে নেওয়ার অন্যতম নেতৃত্বদানকারী এনায়েত বেপারী।
তিনি ফোন করে নিজস্ব মতামত না দিয়ে পুলিশের এসআই সোহাগকে নির্দোষ প্রমানের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে প্রতিবেদককে অর্থের অফার দেওয়া হয় সংবাদটি প্রকাশ না করার শর্তে।
হিজলা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, জমির ধান রোপনের সময় কোনো ঝামেলা হয়না। ধান পাকা শুরু করলেই একাধীক মালিক সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও বলেন, পুলিশে এধরনের হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি এখনই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

85 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন