২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশালে সয়াবিন খেতে মিলল আলীগ নেতা জামাল মাজির মরদেহ

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৪

সাইফুল ইসলাম হিজলা ::আ.লীগ নেতা জামাল মাঝির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বরিশাল সেবা চীমে প্রেরণ। থানায় মামলা।

বরিশালের হিজলা উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে নিজের অনুসারী জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিযোগ করে বলেছেন- জামালকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন হিজলা থানার ওসি জুবাইর। নিজ বাড়ির সামনে মেঘনা নদীর তীরে সয়াবিন ক্ষেত থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত জামাল মাঝি (৬০) ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পালপাড়া গ্রামের আ. কাদের মাঝির ছেলে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি পরিবারের।

জামালকে নিজের অনুসারী দাবি করে বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা) আসনের সংদস সদস্য পংকজ নাথ বলেন, জামাল ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তাকে যারা হত্যা করেছে তারা আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদের অনুসারী। গত ২ মার্চ জামালের বাড়িতে শাম্মীর অনুসারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা জামাল মাঝিসহ পরিবারের ৭ সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে জামাল মাঝির ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

এ ঘটনায় জড়িত শাম্মীর অনুসারী সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে শুক্রবার মারধর করা হয়। ঘটনার পর হিজলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপংকর রায় এমপি পংকজের অনুসারীদের এলাকা ছাড়া করে। এতে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কারণে সবাই এলাকা ছাড়া হলেও জামাল মাঝি একাই এলাকায় ছিল। সকালে তাকে পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে শাম্মীর অনুসারীরা।

এ ব্যাপারে জানতে ড. শাম্মী আহমেদের ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও ফোন রিসিভ হয়নি।

জামালের স্ত্রী আখি বেগম জানান, বাড়ি না ফেরায় রাত ২টার দিকে স্বামীর ফোনে কল দেন তিনি। তখন স্বামী জানিয়েছিল ভালো আছে। সকাল ৯টার দিকে জানতে পারেন স্বামীর মরদেহ সয়াবিন ক্ষেতে পড়ে আছে।

আখি বেগমের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন ঢালীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী জামাল মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে জামালউদ্দিন ঢালী বলেন, রাত ৪টা পর্যন্ত পুলিশ এলাকায় ছিল। কারা করেছে, তারাই জানে না। আমি কীভাবে জানব। ঘটনাস্থল নির্জন। কে করেছে কেউ দেখেনি।

তিনি আরও বলেন, সকাল ৭টার দিকে একজন কল দিয়ে আমাকে জানায়, সয়াবিন ক্ষেতের মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ঘটনাস্থলে চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) আলী আশরাফকে পাঠাই। সে লাশ দেখতে পেয়েছে। পরে পুলিশ গিয়েছে।

চৌকিদার আলী আশরাফ জানান, চেয়ারম্যান কল দিয়ে তাকে বলেন, জামাল মাঝির বাড়ির সামনে সয়াবিন ক্ষেতের মধ্যে তার লাশ পড়ে আছে। সকাল ৮টায় সেখানে গিয়ে লাশ দেখতে পান তিনি। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপংকর রায় বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় লাশ পেয়েছি। কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে বলতে পারব হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিল।

এমপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, গত ১৫ দিন ধরে ধুলখোলা ইউনিয়নে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। থানা ও আদালতে পাঁচটি মামলা করেছে এক পক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার একজনকে মারধরের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি দুই পক্ষ সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছে। তখন দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করা হয়েছে।

কোনো পক্ষের হয়ে তিনি কাজ করেননি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

90 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন