১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

হিজলায় উপজেলায় গাছ কাটার অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে- ইটভাটায় লাকড়ি বিক্রির অভিযোগ

আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ঃঃ বরিশালের হিজলা উপজেলা সদরে শতবর্ষী রেইনট্রি গাছের ডালসহ কয়েকটি গাছ কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্র-শনিবার দুইদিনে কাটা হয় বেশ কয়েকটি গাছ ও ডাল। ইউএনও উপস্থিত থেকে নিলামের ব্যবস্থা করেন। ভাটায় কাঠ ব্যবহার বন্ধ থাকলেও গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের বান্দেরহাটের ইদ্রিস হোসেন মরুর ইটভাটায় পাঠানো হয় ৫০ মণ লাকড়ও। মরু স্বীকার করেন ইউএনওর ডাকা নিলাম থেকে লাকড়ি কিনেছেন। প্রথমবার স্বীকার করলেও পরে কথা ঘুরিয়ে ফেলেন তিনি। এবার জানান, বাসাবাড়িতে ব্যবহারের জন্য অন্য একজন কিনেছেন লাকড়ি।

উপজেলা চত্বরে ঢোকার পথে বিসমিল্লাহ টাওয়ারের মূল ফটকের পাশে বেশ পুরনো একটি রেইন্ট্রি গাছের ডালসহ অন্য গাছ কাটতে অনুমতি দেন ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম।

স্থানীয়রা জানান, আশপাশের গাছ কাটার অপচেষ্টারই অংশ এটি। প্রভাবশালীদের চাপে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে।

জানা গেছে, ভবনের মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী মন্টু হাজি। কিছু ডালপালা তার বিল্ডিংয়ের ওপর পড়ায় পুরো গাছ কাটতে এ পদক্ষেপ মন্টুর। যাতে মৌখিক সম্মতি দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরওপর ভিত্তি করে গাছ কাটেন মন্টু হাজির লোকজন। এর আগেও সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আশঙ্কা রয়েছে, সুযোগ পেয়ে এবারও
অন্য গাছ কাটা শুরু হতে পারে।
ইউএনও জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত গাছ কাটার তদবির করছিলো ভবন মালিক।
কয়েকদিন আগে তিনি অনুমতি দেন।

এদিকে, সরকারি গাছ কাটতে উপজেলা সমন্বয় সভায় রেজুলেশন পাশ করে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে কাজ করার নিয়ম মানেননি ইউএনও। উপজেলা সামাজিক বনায়ন কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন-‘তাকে কিছুই জানানো হয়নি’লোকমুখে শুনেছেন গাছ কাটার কথা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কাটতে গেলে তাদেরই কাটার কথা।

নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গাছ কাটায়, বিশেষকরে ঐতিহ্যবাহী স্মারকটি নষ্ট করায় ক্ষোভ জানান স্থানীয়রা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য তাদের। এখনই পদক্ষেপ না নিলে সদরের নদীর পাড়ের রাস্তা এবং বেশকিছু সড়কে আরও গাছ হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করেন এলাকাবাসী ও সদরে আসা লোকজন।

ইউএনও জাহাঙ্গীর আলমকে প্রশ্ন করলে তিনি গাছ কাটার কথা এড়িয়ে যান। অথচ ছবি রয়েছে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে। তারপরও সরেজমিনে পরিদর্শন করার পরামর্শ দেন তিনি।

স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তার জবাব, উপজেলা পরিষদের গাছ হওয়ায় বন বিভাগের অনুমতি লাগবে না। এছাড়া রেজুলেশন করা আছে বলে দাবি করেন তিনি। যদিও একপর্যায়ে বলেন, রাজনৈতিক দলের কিছু লোকসহ ভবন মালিক তার কাছে এলে ডালপালা কাটার অনুমতি দেয়া হয়।

দুটির গাছের ডালে ৫০ মণ লাকড়ি হওয়া সম্ভব কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি আবারও সরেজমিন পরিদর্শনের পরামর্শ দেন। বিগত দিনে তার করা কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে খোঁজ নিতে বলেন তার সম্পর্কে।
ইটভাটা মালিক স্বীকার করলেও ভাটায় লাকড়ি বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন জাহাঙ্গীর আলম। ক্রেতা ৫০ মণ লাকড়ির কথা বললেও ইউএনওর দাবি ৬ থেকে ৭ মণ হবে। প্রয়োজনে নিলাম বাতিল করে ফেরত আনার কথাও জানান নির্বাহী কর্মকর্তা।

এদিকে, প্রভাবশালীদের চাপে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

168 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন