আপডেট: জুলাই ২০, ২০২১
বিজয় নিউজ:: যানজট আর বৃষ্টিকে সঙ্গী করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছেন হাজারো মানুষ। গত কয়েক দিনের মতো ঈদের আগের দিন গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে রয়েছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। যাত্রী, বাসের হেলপার-ড্রাইভার অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। যাত্রীদের হাতে জীবাণুনাশক ছেটানো কিংবা সামাজিক দূরত্ব কিছুই দেখা যায়নি। বৃষ্টিতে ভিজে, কাদা মাড়িয়ে যাত্রীদের বাসের খোঁজ করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকালে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের ভেতর ও বাইরের মূল সড়কে বাসের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় যাত্রীদের। মহাসড়কে যানজট থাকায় সময়মতো বাস আসছে না।
গুনতে হচ্ছে তিনগুণ বেশি ভাড়া
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসতে তিনগুণের বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
তারা বলছেন, ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে রাখার পরও ঈদ বখশিশের অজুহাতে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন চালক, হেলপাররা। সেখানে মানা হচ্ছে না অর্ধেক সিট ফাঁকা রাখার নিয়ম।
মিরপুর-১২ থেকে গাবতলী এসেছেন ডাব ব্যবসায়ী আমিরুল ও তার ছেলে। ১০ টাকা ভাড়ার জায়গায় তাদের কাছ থেকে রাখা হয়েছে ৩০ টাকা। আর মালপত্র থাকায় আরও ৫০ টাকা বেশি ভাড়া রেখেছেন হেলপার।
আমিরুল বলেন, ‘ঈদের সময় ভাড়া বেশি নেয়। সবসময়ই নেয়। কেউ তো কিছু করবার পারে না।’
মানিকগঞ্জ যেতে সদরঘাট থেকে গাবতলী এসেছেন ব্যবসায়ী জামাল। তাকেও গুনতে হয়েছে তিনগুণের বেশি ভাড়া। তিনি বলেন, ১০০ টাকা ভাড়া দিলাম আর সব সিটেই ছিল যাত্রী।
বিভিন্ন মাধ্যমে গন্তব্যের পথে মানুষ
যারা অগ্রিম বাসের টিকিট কাটতে পারেননি তারা বেছে নিচ্ছেন পিকআপ অথবা মাইক্রোবাস। এমনকি মোটরসাইকেলে চড়ে অনেক যাত্রীকে বাড়ির উদ্দেশে ছুটতে দেখা গেছে।
যাত্রীরা বলছেন, ঈদের পর লকডাউনের কারণে পোশাক কারখানা বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে শেষ মুহূর্তে অনেকেই গ্রামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভাড়া বেশি হওয়ার স্বল্প আয়ের এসব মানুষ গাদাগাদি করে ট্রাক ও পিকআপে করে রওনা দিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন দুই বন্ধু তুহিন ও আকিফ। তারা বলেন, গতকাল অফিস ছুটি হয়েছে। ভেবেছিলাম আজ রাস্তা ফাঁকা থাকবে। কিন্তু সকাল থেকে বৃষ্টি এর মধ্যে গাড়িও নেই কাউন্টারে। বাইরে যেসব গাড়ি টাঙ্গাইল যাচ্ছে তারা অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছে।
বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা
মহাসড়কে তীব্র যানজট থাকায় ঢাকায় সময়মতো আসতে পারছে না বিভিন্ন পরিবহনের বাস। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
দুপুর ১টায় গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাসেল বলেন, ‘কাল রাতের গাড়ি এখন সাভারে আটকে আছে। পিরোজপুর থেকে ৮টায় ছাড়ছে গাড়ি এখনও আসে নাই। গাবতলী আসতে আরও তিন ঘণ্টা লাগবে। অথচ এখান থেকে এই গাড়ি সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা ছিল।’
এদিকে বেলা ১২টায় সার্বিক কার্যক্রম দেখতে গাবতলী টার্মিনাল পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। এ সময় যাত্রী ও গণমাধ্যম কর্মীরা বাসে অতিরিক্ত ভাড়া ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি তাকে অবহিত করেন। সব শুনে, ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বিআরটিএ চেয়ারম্যান। এরপর ১৫ মিনিট পরিদর্শন করে তিনি গাবতলী ত্যাগ করেন।