আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৫
সাড়ে সাত বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অবশেষে মায়ের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করলেন। চিকিৎসার জন্য ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর আর কোনো বিদেশ সফর কিংবা মা-ছেলের দেখা হয়নি। বুধবার (৮ জানুয়ারি – বাংলাদেশ সময়) দুপুরে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে মা ও ছেলের এ পুনর্মিলনী হয়।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার বড় ছেলে তারেক রহমান এবং পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। মাকে কাছে পেয়ে তারেক রহমান আবেগাপ্লুত হয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। এই মুহূর্তে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ, যা উপস্থিত সবাইকে ছুঁয়ে যায়।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরাও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে কাতারের দোহায় যাত্রাবিরতি করে বিমানটি।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। কারাগারে যাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়। সম্প্রতি চিকিৎসকদের পরামর্শে তার লিভার প্রতিস্থাপন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির মামলার রায় বাতিল করেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার করেন। বর্তমানে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য লন্ডনের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। চিকিৎসকদের ধারণা, পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
মা-ছেলের এই পুনর্মিলনী সাধারণ মানুষের মাঝে আবেগের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে। দেশবাসী প্রার্থনা করছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারেন।