২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় মন্দির ও স্কুলের জমিনিয়ে উত্তেজনা

আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৩

গিয়াস উদ্দিন রানা, ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ থেকে,:: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় মন্দিরের রেকডিয় জমি স্থানীয় সংসদ সদসের বাবার নামে আব্দুর রশিদ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ক্ষমতার জুড়ে দখল নেওয়ায় ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যেও বিরুদ্ধে মন্দিরের দোকানকোঠা ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশের অভিযোগে সুখাইড় গ্রামে তমতম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলাধীন সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের সুখাইড় জমিদার বাড়ী সংলগ্ন স্থানীয় সংসদ সদদ্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাবা নামে আব্দুল রশিদ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে কালীবাড়ি মন্দির কমিটির মধ্যে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। চলমান দ্বন্দ্বের জেরে বৃহস্পতিবার এমপি রতন স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্টানে এসে মন্দিরের নির্মাণ করা আটটি দোকানঘর ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন তাঁর অনুস্বরণ কারি লোকদের। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামী মঙ্গলবার দোকানগুলো ভাঙ্গার প্রস্তুতি নেওয়ার হচ্ছে-এমন সংবাদে পরিস্থিতির মোকাবেলায় উভয় পক্ষ সংগঠিত হচ্ছে বলে জানাগেছে। তবে এমপি বলছেন, এমন কোনো বিষয়ই নেই। এস মিথ্যা বানোয়াট প্রচারণা চালাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, ব্রিটিশ শাসনামালে সুখাইড়ের জমিদার মথুর চন্দ্র রায় বাহাদুর সুখাইড় কালীমন্দিরের নামে ৪৫শতাংশ জমি লিখে দেন। মন্দিরের পাশে ১৯৪২ সালে একটি হাই স্কুলও প্রতিষ্টা হয়। এখানে জমি ছিল ১৮ শতাংশ। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় ওই স্কুলের শিক্ষকরা এলাকা ছেড়ে চলে গেলে ওই প্রতিষ্টানটি বন্ধ হয়ে যায়।
মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সংসদ সদস্য হওয়ার পর ২০১৩ সালে সরকারি খাসজমিতে নিজের বাবার নামে আব্দুর রশিদ মেমোরিয়াল হাই স্কুল নামে স্কুলটি প্রতিষ্টা করেন। ওই স্কুলের ভবন নির্মাণের সময় মন্দিরের কিছু জমি স্কুল ভবনের অংশে ঢুকেছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় সনাতনধর্মীয়রা। সম্প্রতি মন্দিরের জমির একাংশে স্কুলের সিড়ি নির্মাণ করতে চাইলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে ক্ষব্দ হন এমপি রতন। বৃহস্পতিবার স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় এমপি রতন স্থানীয় প্রশাসনকে মন্দিরের ওই আটটি দোকানকোঠা ভাঙার বিষয়ে বলেন, আপনারা না ভাঙলে আমার লোকজনেই এটি ভাঙবে। এ কথা বলার পর থেকেই এলাকায় তমতমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মন্দির কমিটির লোকজন বলেছেন, মন্দিরের দোকানকোঠা ভাঙার চেষ্ঠা করলে আমরা তা প্রতিহত করা হবে।
ধর্মপাশা উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদের যুগ্ন আহবায়ক ঝন্টু দাস বলেন, জমিদারের দান করা জমি আছে ৬৩ শতাংশ এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ মন্দিরের জন্য। বাকি অংশ স্কুলের জন্য। এমপি সাহেবের বাবার নামে স্কুল। সেটি তিনি নিজে জমি কিনে সুন্দর করে তার বাবার নাম লিখলেইতো পারেন। তা তো তিনি করেননি মন্দিরের দোকানকোঠার আয় দিয়েই মন্দিরের সব খরচ চলে। এটি কি করে ভাঙার কথা বলেন। ঝুটন দাসের কথার সাথে একমত পুষন করে সুখাইড় গ্রামের তরুণ দাস, পিযুষ দানসহ একাধিক ব্যক্তি।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেকসাধারন সম্পাদক নবনী দাস জানান, ৬৫ ইরেজির এসএ রেকর্ডে কালীমন্দিরের নামে ৪৫ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়েছে। বর্তমান রেকর্ডে কীভাবে ২২শতাংশ মন্দির এবং ২৩ শতাংশ এমপি সাহেবের বাবার নামে রেকর্ড হলো? এন্দিরের দোকানকোঠা ভাঙার ঘোষণায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস বলেন, সম্প্রতি বজায় রেখে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতেশ চন্দ্র সরকার বলেন, মন্দির এবং স্কুলের জমি নির্দ্ধারন করেই বলা যাবে কার জমি কে দাবি করছে।
এ দিকে এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, মন্দিরের কোনো স্থাপনা ভাঙার কথা বলেননি। তাঁর বিরুদ্ধে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

97 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন