২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

বরিশালে আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপি মৎস্য ব্যবসায়ী জহির সিকদার তুমি কার !

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪

বিজয় নিউজ:: পুরো দস্তুর বিএনপি বনে গেছেন মৎস্য ব্যবসায়ী বরিশাল নগরীর শহীদ জিয়া মৎস্য পাইকারী অবতরন কেন্দ্রের আহ্বায়ক জহির সিকদার। তার সাঙ্গপাঙ্গরাও একই বুলি বুলাচ্ছেন। অথচ কিছুদিন পূর্বেও একই লোকের মুখে শোনা গেছে আওয়ামীলীগের শ্লোগান।

৫আগস্টের পর রাত পাড় হয়ে দিনের আলো ফুটতে না ফুটতে বিএনপিকে বিতর্কিত করতে পোর্টরোড মৎস্য আড়তের সাইনবোর্ডে আনা হয়েছে পরিবর্তন। সেখানে বরিশাল জেলা মৎস্য পাইকারী অবতরণ কেন্দ্রেরস্থলে সাইনবোর্ডের নীচেই ব্যানারে লেখা ঝোলানো হয়েছে শহীদ জিয়া মৎস্য পাইকারী অবতরন কেন্দ্র। অথচ মহানগর ও জেলার নেতৃবৃন্দ

জানিয়েছেন এ বিষয়টি তাদের জানা নেই। তবে বর্তমানে মৎস্য অবতরণটি লিজ নিয়েছেন খালেদা বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনি হচ্ছে বরিশাল জেলা মৎস্য পাইকারী অবতরণ কেন্দ্রের সভাপতি খান হাবিবের স্ত্রী। কিন্তু সবকিছুতেই মাতুব্বরী দেখাচ্ছেন জহির সিকদার ও কামাল সিকদারসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি শওকত হোসেন হিরন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর খান হাবিব মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহন করেন। এরপর শওকত হোসেন মেয়র থাকাকালীন দীর্ঘ ৩ বছর মৎস্য অবতরন কেন্দ্র পরিচালনা করে আসছিলেন। ওই সময় আওয়ামীলীগের সাথে মিশেই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন জহির সিকদার। পরবর্তীতে সিটি মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামাল। ওই আমলে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার এ্যাসোসিয়শেন কেন্দ্র পরিচালনা করে আসছিলেন নীরব হোসেন টুটুল। তারও ঘনিষ্টজন হয়ে ওঠেন মাছ ব্যবসায়ী জহির সিকদার। টুটুলের সকল অনিয়মকে জহির এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা প্রশ্রয় দিতেন। অভিযোগ রয়েছে টুটুলের নির্দেশনা না মানলে সেখানে ব্যবসা করতে পারবে না তারা।

এ কারনে তার নির্দেশনা মেনেই তারা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হলে টুটুলের দায়িত্বে থাকে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার এ্যাসোসিয়শেন কেন্দ্র। এরপর পুরোপুরো আওয়ামীলীগ বনে যান জহির সিকদার। সাদিক আব্দুল্লাহর সাথে প্রতিটি প্রোগ্রামে রয়েছে জহিরের ছবি। সাদিক আব্দুল্লাহর পাশে থাকতে পেরে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করতেন। এরপর মেয়র নির্বাচিত হন হাসানাতের ভাই খোকন সেরনিয়াবাত। ওই সময় লীজের মাধ্যমে পোর্টরোড পদ্মাবতী মাছ ঘাটের ডাক পান খালেদা বেগম। এরপর আরিফুর রহমান রুমী পোর্টরোড বরিশাল সদর মৎস্য আড়তদার এ্যাসোসিয়েশন পরিচালনা শুরু করেন। সেখানেও জহির সিকদার আরেক রূপে হাজির হন। খোকন সেরনিয়াবাতের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যেতো হাস্যোজ্জল। এমনকি তার বাসায় গিয়েও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে ছবিও তুলেছেন জহির সিকদার। এখন রাতারাতি বিএনপি বনে গেছেন এ মৎস্য ব্যবসায়ী। সংশ্লিষ্টরা জানান, খালেদা বেগম সরকার থেকে লিজ নিয়ে বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার এ্যাসোসিয়শেন পরিচালনা করে আসছিলেন। এর দায়িত্বে ছিলেন তার জামাতা আরিফুর রহমান রুমী। কিন্তু ৫ আগস্টের পর বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার এ্যসোসিয়শেন দখলের পায়তারা শুরু করে জহির ও কামালসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। এমনকি শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। তার মধ্যে শ্রমিকদের পরিবারগুলোকে বাচিয়ে রাখতে কোনভাবে পোর্টরোড পদ্মাবতী মাছ ঘাটের পরিচালনা করছেন বর্তমান ইজারাদার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী সমস্যা সৃষ্টি করছেন নব্য বিএনপি বনে যাওয়া জহির সিকদার ও কামাল সিকদার। তারা আসলে কোন দলের লোক তা কেউ জানি না। খান হাবিবের দায়িত্বকালে তার সাথে থেকেই আওয়ামীলীগকে জিন্দাবাদ জানিয়েছেন জহির ও কামাল। এখন জিন্দাবাদ দিচ্ছেন বিএনপিকে। মহানগর বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের নাম কারা পরিবর্তন করেছে তা তার জানা নেই। এ ধরনের কাজ করা থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিষেধ করেছেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সকল নেতাকর্মীকে চলার আহ্বান জানান তিনি।

279 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন