২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

এলজিইডির অপকর্মের গডফাদার মিরাজল ইসলামের আত্মগোপনে

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

বিশেষ প্রতিবেদকঃঃ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে সরকারী উন্নয়নমূলক কাজের বিভিন্ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করে থাকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দেশের মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার মধ্যে পিরোজপুর হচ্ছে উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রে সবদিক দিয়ে খারাপ জেলা। এই জেলার কাজের মান খারাপ হওয়ার জন্য মিরাজুল ইসলাম দায়ী। তিনি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। ভান্ডারিয়রা-কাউখালী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য মহারাজ এর ছোটো ভাই। দু’ভাই আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। এই মহারাজ একসময় জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবশ্য এই নির্বাচনে জেতার জন্য তার ভাই ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় করেন। মিরাজের সাথে এলজিইডির সকল দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তার সম্পর্ক আছে। পিরোজপুর জেলায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর পোষ্টিং হতো এই দুই ভাইয়ের ইচ্ছানুযায়ী। বিগত ১৫ বছরে এলজিইডির দুর্নীতিগ্রস্থ অফিসারদের খুঁজে বের করে পোষ্টিং দেওয়া হয়। প্রথমদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়ে আসেন আব্দুল হাইকে। তার সাথে মতবিরোধ হলে নিয়ে আসেন নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল হাসানকে। তিনি সেখানে প্রায় চার বছর ছিলেন; তার সময়ের এলজিইডি পিরোজপুরের কাজের মান খুব খারাপ হলে তাকে প্রধান প্রকৌশলী তুলে নিয়ে আসেন। নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে নিয়ে আসা হয় এলজিইডির সবচেয়ে সমালোচিত প্রকৌশলী জনাব সুশান্ত রঞ্জন রায়কে। তিনি এমন কোনো অপরাধ নাই যা এদের পক্ষে করেন নাই; টেন্ডারবাজি, অপ্রয়োজনীয় রিভাইস, ওভারপেমেন্ট, ডুপিকেশন (একই স্কীম একের অধিক প্রকল্প থেকে টেন্ডারকরণ) ইত্যাদি অনেক ভয়ানক অপরাধ। সুশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হলে কর্তৃপক্ষ তাকে সরানোর উদ্যোগ নেয়, আরেক দুর্নীতিপরায়ন নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদারকে নিয়ে আসা হয়। তিনি গত জুন মাসে অবসরে গিয়েছেন। এরপর নিয়ে আসা হয় অনৈতিক কাজের মাস্টারমাইন্ড বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী রনজিত দেকে। পরবর্তীতে মিরাজুল ইসলাম তৎকালীন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রশীদের সহযোগীতায় (কোটি টাকার বিনিময়ে) সুশান্ত রঞ্জন রায়কে ‘বরিশাল-ঝালকাঠী-পিরোজপুর’ (ইঔচ) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পাওয়িয়ে দেন। এই প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুর জেলায় ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড কাজ পায়। যাহার প্রোপ্রাইটর মিরাজুল ইসলাম। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য (ওইজচ) নামে একটি প্রকল্প চালু হয়। এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন আহমদ আলী। তাকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সুশান্ত রঞ্জন রায়কে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। কারণ আহমেদ আলী জানতে পারেন তার প্রকল্পের প্রায় ১৫/২০টি ব্রীজের কাজ শুরু হয়নি। অথচ ৮৫% পেমেন্টের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এই কাজগুলো করার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। যাই হোক, কাজগুলোর ওভারপেমেন্ট, ডুপিকেশন, টেন্ডারিং ইত্যাদি ঘাপলাসহ আহমেদ আণলীর বিষয়টি পুণঃতদন্ত করে দেখা উচিত বলে সংশিষ্টরা জানান। ইউওজডঝচ প্রকল্প এর কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। শুরুতেই এই প্রকল্প থেকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার স্কীম বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বানের নিমিত্তে অনুমোদন দেয়া হয়। ঐ অর্থ-বছরেই পিরোজপুর জেলায় প্রকল্প পরিচালক ১১০ কোটি টাকা ছাড় করেন। কাজগুলোর বেশিরভাগই নামে-বেনামে বাস্তবায়ন করছে ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। তাদেরকে বরাদ্দকৃত টাকার প্রায় পুরোটাই দিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তখন পর্যন্ত মাঠে ৫% কাজও বাস্তবায়িত হয়নি। তাকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার জন্য মিরাজ কোটি টাকার বেশি মন্ত্রীকে প্রদান করেন। টঐইচ প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন মোঃ সেলিম মিয়া। এ প্রকল্পের অধীনে পিরোজপুর জেলায় ১৮টি ব্রীজ নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। প্রায় সবগুলোর কাজ করার দায়িত্ব পায় ইফতি. ইটিসিএল (প্রাঃ) লিমিটেড। এসব স্কীমের ১৪টি তারা নিজে করছে

84 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন