১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

অসম প্রেম ঝরে গেল একটি জীবন, এ মৃত্যুর দায় কার ?

আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২৫

ফকির সাইফুল ইসলাম,মুলাদি ঘুরে   :: প্রেমিক, ভাবুক, প্রতারক, সবগুলোতে দক্ষ কারিগর তাপস চন্দ্র মন্ডল। শত শত নারীর সম্ভ্রম নষ্টকারীর কারখানা তাপস মন্ডল এবং সুমন মন্ডল। উভয় মূলাদিতে উদ্বাস্তু। এ অবৈধ প্রেম কে কেন্দ্র করে তাপসের মৃত্যু!

তাপস মন্ডলের স্থায়ী নিবাস হিজলা উপজেলায় এবং সুমন মন্ডলের বাড়ি কাজিরহাট থানায়।  উভয় বসবাস করতেন মুলাদী উপজেলায় চরকালেখান মন্ডল বাড়ি  । পেশায় চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের ভুয়া  উদ্যোক্তা,দালাল ।
এ দালালের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়েছে সাধারণ মানুষের। এতে সায় দিচ্ছে প্রশাসন। হওয়ার কথা ছিল গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা। হয়ে গেলেন মুলাদী উপজেলার চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা। রহস্য তখন থেকেই।
২০১৪ সাল থেকে চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে আসছিল তাপস মন্ডল । এমনটাই দাবি তাপস চন্দ্র মন্ডল এর ভাই সুভাষ মন্ডল এর। সুমন মন্ডল দাবি করেন তাপস ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা। তার মাধ্যমে তিনিও কাজ করিয়েছেন।

বাড়ি হিজলায়, মুলাদীর চরকালেখান গ্রামে বসবাস। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা। শতশত নারীর সাথে প্রেম। রয়েছে নিজের স্ত্রী মনিকার ঘরে , দুটো সন্তান। তারপরেও অন্যত্র প্রেম।  মূলত অবৈধ প্রেম নিয়ে উভয় পক্ষের বিরোধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে তাপস মন্ডল এর বিষ খাওয়ার একটি ভিডিও।ওই ভিডিওকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে চলছে নানা মুখরোচক আলোচনা।

নিজের স্ত্রী সন্তান থাকলেও পরকীয়ায় তিনি ছিলেন চ্যাম্পিয়ন। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মূলাদীবাসী। নিজ পরিবারেও তিনি ছিলেন অবাঞ্চিত, মূলাদিতেও  তেমন  ।
ভাই সুভাষ মন্ডল এবং পিতা মুক্তেশ্বর মন্ডল জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে পাঠানো হয় মালয় এশিয়া। মাত্র ২৩ দিন অবস্থান করেন বিদেশে। পরকীয়ার টানে আবারো চলে আসেন বাংলাদেশে। এরপরে পুরনো প্রেম। চলে যায় মুলাদীর চর কালেখান গ্রামে। সেখানেই শেষ পরিণতি। এমন অভিযোগ তাপসের পিতা মুক্তেশ্বর মন্ডল এবং তাপসের ছোট ভাই সুভাষ মন্ডল এর।
এর আগেও মূলাদির স্বপন মন্ডল ও তার স্ত্রী রাখির সাথে অবৈধ সম্পর্কের বিষয় একাধিক শালির বৈঠক বসে। দুই পরিবারে বিষয়টি নিয়ে রশি টানাটানি চলে। সর্বশেষ স্ট্যাম্পে পিতা মুক্তেশ্বর মন্ডল পুত্র তাপস মন্ডল দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে ছেলে তাপস মন্ডল কে নিয়ে আসেন হিজলায়। তাতেও ক্ষান্ত হননি তাপস মন্ডল। পরিবারের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুরনো প্রেমিকা রাখী মন্ডলের চরকালেখান গ্রামের বাড়িতে চলে যান তাপস মন্ডল। সেখানেই বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় তাপস মন্ডল । এমন দাবি স্বপন মন্ডল ও তার পরিবারসহ এলাকাবাসীর ।

(প্রয়াত তাপস মন্ডল এর দুই সন্তান এবং ছোট ভাই)

মারধরের বিষয়টি এখন মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
স্থানীয় জাকির চৌকিদার, সুমন মন্ডল , মামুন এবং হাকিম ঢালী সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, তাপস মন্ডল স্বপন মন্ডলের বাড়িতেই বসবাস করতেন। একই পরিবারের মত বসবাস ছিল তাদের। তবে তাপসের স্বভাব চরিত্র নিয়ে আগে থেকেই এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত। পরিষদেও তার রয়েছে দুর্নাম।

ঘটনার দিন রাতে স্বপন মন্ডলের বাড়ির উঠানে বাধা ছিল তাপস মন্ডল। তাপস কে বাধা থেকে মুক্ত করে মুলাদী হাসপাতালে প্রেরণ করেন তারা ।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে আসছিল তাপস মন্ডল । একই কাজে সহযোগী ছিলেন সুমন মন্ডল। উভয় চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের বহিরাগত সদস্য। সুমন মন্ডলের বাড়ি পার্শ্ববর্তী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজির হাট থানায়। তাপস মন্ডল অবৈধ সম্পর্কের জড়িয়ে পড়েন সুবাসের স্ত্রীর রাখি মন্ডলের সাথে। সুমন মন্ডল ওই সুবাদে সম্পর্কে জড়ান তাপস মন্ডলের স্ত্রীর সাথে। তবে সুমন মন্ডল বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তাপস চন্দ্র মন্ডল এর ভাই সুভাষ মন্ডলের দাবি, তার ভাই স্বপন মন্ডলের স্ত্রী রাখির সাথে অবৈধ সম্পর্কের জড়িয়ে যান। বিষয়টি তাদের পরিবার নিভৃত করার চেষ্টা করেন। সর্বশেষ তারা ব্যর্থ হন। ভিডিওর বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না। তারা আইনের আশ্রয় নেবেন।
মোহাম্মদ মিরাজুল ইসলাম সরদার , চরকালে খান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, তিনি জানান ছেলেটির স্বভাব চরিত্র আগে থেকেই খারাপ। তাকে তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। পূর্বের চেয়ারম্যান তাকে কিভাবে নিয়োগ দিয়েছে তা তার জানা নেই। তাপস মন্ডলকে রাতে ঘটনার স্থল থেকে উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ওসি মুলাদী থানা জানান, মুলাদী উপজেলায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন