২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

হিজলার টিপু সিকদার দশ বছরে শত কোটি টাকার মলিক

আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০১৯

বিজয় নিউজ:: দশ বছরের ব্যবধানে শুধু পদ-বাণিজ্য ও প্রমোশন, বদলি তদবির ও সরকারি প্রকল্পের কমিশন বানিজ্য জমিদখল করেই তিনি আজ শত-কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এছাড়াও করেছেন কয়েকটি বাড়ি, ফ্ল্যাট ও শতশত একর জমি।

তিনি ইউনিয়ন কমিটি গঠনেও নিয়েছেন ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা। ফলে খুব অল্প সময়ে এখন তিনি শত-কোটি টাকার মালিক।তিনি হলেন- হিজলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার।

তিনি পাশাপশি বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তিন ভাইও কম হননি। আওয়ামী লীগ ও তার এলাকার বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

হিজলা উপজেলা আওয়ামীলীদের নেতারা জানান, এলাকায় অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপু। দীলয় ক্ষমতা ব্যবহার করেই সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন তিনি। হিজলা এবং ঢাকা করেছেন একাধিক বাড়ি ও ফ্লাট। উপজেলা সদরে রয়েছে তার ৩টি বাড়ি। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি তাকে। একই সাথে আওয়ামীলীগের উপজেলা সেক্রেটারী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্ষমতা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন হিজলার টিপু সুলতান।

মেঘনায় ১৫-২০টি মাছ ঘাট নিয়ে তার নির্বাচনী প্রতীক ছাতা ব্যবহার করে মেঘনায় আধিপত্য বিস্তার করে জেলেদের বাধ্য করেন তার মাছ ঘাটে মাছ বিক্রী করতে এতে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নেন তিনি। তৎকালীন সময়ের স্বঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মিজান সরদারের মাধ্যমে গোডাউন সিন্ডিকেট তৈরী করেন।

স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ কিংবা মন্দির যাই হোক প্রতিটন চাউলের মুল্য মাত্র ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা ধরিয়ে দিতেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতির হাতে। ততকালিন সময় বাজারে একটন চাউলের মুল্য ৩২/৩৪ হাজার টাকা ছিলো। চালের ডিও নিয়ে গোডাউন থেকে চাল উত্তোলন করে বিভিন্ন মোকামে বিক্রি করে কোটি টাকা কামিয়েছেন। উপজেলার যেখানেই হাট-বাজার স্কুল-মাদ্রাসার কমিটি গঠনে বিভিন্ন বাজার, স্ট্যান্ড, খেয়া ইজারা নিতে টাকা দিতে হত তাকে।

কাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ ব্যবহার করে নিয়োগ বাণিজ্য, স্কুলের মাঠের জমিতে ২০টি স্টলের ভাড়া, তাছাড়া স্কুলের নামে গরুর হাট থেকে গরু প্রতি একশত টাকা করে ১০ বছরে অন্তত এক ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন টিপু সিকদার। মাউনতলা ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি পদে থাকায় মাদ্রাসার নিয়োগ বাণিজ্য ও মাদ্রাসার অভ্যন্তরের বিভিন্ন গাছ বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেন। কাউরিয়া বড় মসজিদের সভাপতি পদ থাকায় মসজিদের জন্য কাউরিয়া বন্দরেরর প্রতি মন ধান থেকে এবং সুপারীর বাজার থেকে স্থানীয় সংখ্যা ভি প্রতি ১টাকা করে টাকা করে উত্তোলনকৃত লক্ষ লক্ষ আত্মসাৎ করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের একটি কক্ষ দখল করে নেন। হিজলা ৪শত গভীর পানির কল আসছে, এমন মিথ্যা তথ্য রটিয়ে প্রতিটি পানির কল বাবদ ২০/২৫ হাজার টাকা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন সুলতান মাহমুদ টিপু। এই টাকা এখনও ফেরত পায়নি অনেকেই।
তিনি উপজেলা সদরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারী জায়গায় এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষা গবেষণা পরিষদের জায়গা দখল করে নির্মাণ করে একটি বাড়ি। খুন্না বন্দরে পাউবোর জায়গা দখল করে স্থায়ী ভবন তৈরী করেন তিনি। কাউরিয়া বন্দরে কাউরিয়া ভুমি অফিসের একটি মজা পুকুর বালু দিয়ে বিভিন্ন জনের নিকট ভিটি বিক্রী করে অন্ত্যত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন জনের নামে চান্দিনা ভিটির লীজ নিয়ে অবৈধভাবে স্থায়ী পাকা ভবন তৈরী করে মার্কেট নির্মান করেন। কাউরিয়া বন্দরে পাউবো ও খালের জায়গা দখল করে দোকান নির্মান করেন তিনি।
হিজলা বিভিন্ন চরে বেনামে অন্তত শতশত একর জমি বন্দোবস্ত নেন তিনি। কাউরিয়া বন্দরে বিশাল জায়গা নিয়ে নির্মান করেন আলিশান মার্কেট ও বাড়ি।

এছাড়া ঢাকায় নির্মান করেন বিলাশ বহুল বাড়ি ও ক্রয় করেন ফ্লাট। এই ভাবেই দূর্নীতি ও দখল বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন সুলতান মাহমুদ টিপু। এলাকাবাসি জানায় দুর্নীতি দমন কমিশনের নিখুত তদন্তে বেরিয়ে আসবে প্রকৃত তথ্য।
তার ভাইয়েরা বিভিন্ন ভাবে অবৈধ উপায়ে উপজেলা সদরে সরকারী কক্ষ দখল করে তার ভাই আলতাফ উদ্দিন দিপুকে দিয়ে করেন ঠিকাদারী সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের বাহিরে কেউ টেন্ডারে অংশগ্রহন করতে পারেনি। প্রতিটি ঠিকাদারী কাজের জন্য ১০/১৫% টাকা দিতে হত দিপুকে। কয়েক বছরের মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা মালিক হয় দিপু।
উপজেলা টেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি দিপু তিনি শতাধিক টেম্পুর প্রতিটি টেম্পু থেকে সমিতির সদস্য বাবদ ১০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি টেম্পু থেকে দৈনিক একশত টাকা নিত। বিভিন্ন অজুহাত দেখাতেন নিপু। থানা পুলিশ কিংবা অন্য কোন ঝামেলা এড়াতে টেম্পু মালিক টাকা তুলে দিতেন নিপুর হাতে।

এছাড়া ছোট ভাই সাহেব সিকদার শুরু করেন চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা।

হিজলায় প্রথম মাদক ইয়াবা আমদানী শুরু করেন সাহেব সিকদার, অন্তঃ জেলা মাদক ব্যবসায় পাইকারী হাট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে সাহেব সিকদারের আস্তানা কাউরিয়া বন্দর। মাদক মামলায় বেশ কয়েক মাস জেল হাজতে থাকতে হয় সাহেব সিক্দারকে। কয়েক বছরের মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক হয়।

এ বিষয় জানতে হিজলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপুর সিকদারের মোবাইলে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

191 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন