২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

রোজার প্রভাবে অস্বাভাবিক দাম,চাল-ডাল-তেল-চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম কমেছে

আপডেট: জুন ৬, ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাস ও রোজার প্রভাবে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর গত এক মাসের মধ্যে রাজধানীর বাজারগুলোতে চাল, ডাল, তেল, চিনি, আদা, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম কমেছে। তবে ডিম ও আলুর দাম বেড়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বংলাদেশে’র (টিসিবি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভী বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মীরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে টিসিবি।

চাল
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে নাজির ও মিনিকেট চালের দাম ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৫৪ থেকে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম ৫ শতাংশ কমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৮ টাকা কেজি। এই চালের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

আটা-ময়দা
গত এক মাসে প্যাকেট আটার দাম ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে খোলা আটার কেজি আগের মতোই ২৮ থেকে ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দার দাম এক মাসে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। গত এক মাসে দাম কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

ভোজ্য তেল
ভোজ্য তেলের মধ্যে গত এক মাসে সব থেকে বেশি দাম কমেছে লুজ পাম অয়েলের। লুজ পাম অয়েলের দাম ১২ দশমিক ৯০ শতংশ কমে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। সুপার পাম অয়েরের দাম ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। লুজ সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

লুজ সয়াবিনের পাশাপাশি বোতলের তেলের দামও কমেছে। এক লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১১০ টকা হয়েছে। আর বোতলের ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৫০ শতাংশ কমে ৪৬৫ থেকে ৫২০ টাকা হয়েছে।

ডাল
গত এক মাসে বড় দানার মসুর ডালের দাম ২৬ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডালের দাম ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট দানার মসুর ডালের কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এতে দাম কমেছে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।

দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে ছোলা ও মুগ ডাল। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে এ্যাংকরের দাম। মুগ ডালের দাম ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ কমে ৯০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ছোলার দাম কমেছে ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ পণ্যটি এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর এ্যাংকর আগের মতো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

চিনি
করোনাভাইরাসের প্রকোপ ও রোজার ভেতর কয়েক দফা দাম বাড়লেও গত এক মাসে একাধিক দফায় কমেছে চিনির দাম। চলতি মাসেও এক দফা দাম কমেছে চিনির। এতে মাসের ব্যবধানে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে।

পেঁয়াজ-রসুন
দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমে কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ২২ দশমিক ২২ শতাংশ কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুনের দাম ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ কমে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গত এক মাসে এ পণ্যটির দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

হলুদ-মরিচ-আদা
দেশি হলুদের দাম ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ কমে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা হলুদ ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা হয়েছে। আগের মতো দেশি শুকনো মরিচ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং আমদানি করা শুকনো মরিচ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দেশি আদার দাম ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। আমদানি করা আদা ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মসলা
৯ দশমিক ৫২ শতাংশ কমে জিরার কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এলাচের দাম ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে কেজি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা হয়েছে। ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ দাম কমে তেজপাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি।

আর দারুচিনির দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে ধনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

মাছ-মাংস
মাছের দাম মাসের ব্যবধানেও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের মতো রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং ইলিশ মাছ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

তবে মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। অবশ্য সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম ২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমেছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল।

ডিম ও আলুর দাম বাড়তি
ঈদের পর প্রায় সব ধরনর নিত্যপণ্যের দাম কমলেও ডিম ও আলুর দাম বেড়েছে। ডিমের দাম মাসের ব্যবধানে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং সপ্তাহের ব্যবধানে ১৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে ৩০ থেকে ৩৩ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। আর গোল আলু মাসের ব্যবধানে ২৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

506 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন