২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় যা বললেন বিএনপি মহাসচিব

আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২২

বিজয় নিউজ:: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ উল্লেখ করে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘জেগে উঠার’ ডাক দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি একটা ভয়ংকর প্রভাব ফেলবে সমগ্র দেশের অর্থনীতির ওপরে। এটা বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। একজন ভদ্র মহিলা আজকে বলেছেন, এটা (জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি) হচ্ছে- মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’

ফখরুল বলেন, ‘আর সময় নেই। আমাদের সবাইকে জেগে উঠতে হবে, জেগে উঠে এদেরকে (সরকার) পরাজিত করতে হবে। আসুন, আমরা আজকে সেই লক্ষ্যে আরও দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলি।’

‘ছাত্রদলের এই সমাবেশ থেকে আমি আহ্বান জানাতে চাই- সব ছাত্রদেরকে, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাতে চাই- আসুন আজকে জাতির প্রয়োজনে, আমাদের ভবিষ্যতে প্রজন্মের প্রয়োজনে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ, অগণতান্ত্রিক, দানবীয়, কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই জ্বালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাবে পরিবহণ ব্যয়, পরিবহণ ভাড়া। একইসঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল-ডাল-আটা-তেল আবার দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মাঝখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কে? ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের সাধারণ মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়।এভাবে বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আজকে সকালেই দেখলাম, কাঁচা মরিচের কেজি তিনশ টাকা।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই যে মানুষের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন চলছে। মানুষ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে, মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আজকে আমরা অন্যায়-নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার, এই সরকার আজকে সবচেয়ে ভয়াবহ দানবে পরিণত হয়েছে। তারা আজকে বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে। সেজন্যই এদেরকে ক্ষমতায় থেকে সরিয়ে দেওয়া- এটাই হচ্ছে একমাত্র দেশপ্রেমিকের কাজ।’

তিনি বলেন, ‘সরকার আইএমএফ (ইন্টারন্যাশনাল মনিটরিং ফান্ড)-এর ঋণ চেয়েছে প্রায় ৪শ কোটি ডলার।কারণ তারা এত মিথ্যাচার করে এসেছে যে, রিজার্ভে এত টাকা আছে, এত ডলার জমা আছে তাদের কোনো চিন্তার কারণ নেই। আজকে রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবির কাছে ডলার ঋণ চেয়েছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আইএমএফের ডলার ঋণের শর্ত খুব শক্ত। তারা বলেছে যে, কোথাও কোনো অধিক ব্যয় করা যাবে না… তারা বলেছে, আজকে যেসব সমস্ত খাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে সেই ভুর্তকিগুলো প্রত্যাহার করা হোক।’

নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় ভোলায় পুলিশের গুলিতে জেলা সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ছাত্র দলের উদ্যোগে ঢাকায় এই সমাবেশ হয়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত এই সমাবেশ হয়। ছাত্রদল মহানগর উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে সমবেত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় থেকে নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশটি সরব হয়ে উঠে। এতে মঞ্চের পাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, আমিরুল ইসলাম আলীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ছাত্র দলের রাশেদ ইকবাল খান, আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আখতার হোসেন প্রমুখ নেতারা।

85 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন