ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও ছেলেধরা আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত এক সপ্তাহে গণপিটুনিতে নিহত ও আহত হচ্ছে অনেকেই। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এসব গুজব ছড়াচ্ছেন দেশ-বিদেশে।

তবে এমন গুজবে কান না দিতে নিষেধ দিয়েছে প্রশাসন। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতেও বলা হয়েছে।

গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি ঘটনায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে সিরাজ মিয়া (২৫) নিহত ও রেশমা (৩৫) নামে এক নারী গুরুতর আহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি আল আমিন নগর ও পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় এ দুটি ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লার শাপলা চত্বরে এলাকায় গণপিটুনিতে এক নারী মারা যান।

নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহা জানান, ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির এসব ঘটনা ঘটছে। সিদ্ধিরগঞ্জে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত ও এক নারী আহত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

গত শনিবার সাভারের তেঁতুলঝোড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে আহত এক নারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এফ এম সায়েদ জানান, শনিবার দুপুর ২টার দিকে তেঁতুলঝোড়া এলাকায় এক শিশুকে বিস্কুট খাওয়ানোর চেষ্টা করছিলেন এক নারী। এ সময় এলাকাবাসী ছেলেধরা সন্দেহে ওই নারীকে গণপিটুনি দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সাভার থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

গত শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে এক নারীকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয়রা। আহত ওই নারীর নাম মমতাজ খাতুন (৪৫) তিনি নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকার আবদুল আলীমের স্ত্রী। পুলিশের দাবি, গণপিটুনির শিকার ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। এছাড়াও শনিবার (২০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরের হায়দরাবাদ ব্রিজ এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে দুই নারীকে গণপিটুনি দিয়ে পূবাইল থানায় সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গুজবকে গুজব হিসেবেই দেখতে হবে। কোনো মহল যদি পরিকল্পিতভাবে এসব গুজব রটিয়ে থাকে তাহলে সেটা খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে গাজীপুরসহ দেশব্যাপী মাইকিং, লিফলেট ও উঠান বৈঠক করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।