৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

শেয়ারবাজারের অচলাবস্থা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা চায়

আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২০

সংসদ রিপোর্টার:: শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে পড়েছে। শেয়ারবাজার একেবারে শুয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী যদি হস্তক্ষেপ করেন তাহলে শেয়ারবাজার উঠে দাঁড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।

বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই দাবি করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে করছিলেন।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দেশ চলে তিন নীতিতে, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং দুর্নীতিতে। শেয়ার মার্কেট মাটিতে শুয়ে গেছে, বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে পড়েছে। অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, শেয়ারবাজার কেন এরকম হল। অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত সুদক্ষ। শেয়ারবাজার নিয়ে চিন্তাও করেন, ওনার একটা গভীর চিন্তা-ভাবনাও আছে। এই মার্কেটের কোথায় কি হচ্ছে এর সম্মুখ ধারণা ওনার আছে। কারণগুলো আমাদের সবার জানা। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দুর্বল পচা কোম্পানিগুলো লিস্ট করে বাজারে ছেড়ে দেয়। আর বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে পড়ে। আমরা বলেছিলাম দুর্বল কোম্পানিগুলোকে যেন লিস্টিং না করে। শেয়ারবাজার ধ্বসের একমাত্র কারণ দুর্বল কোম্পানির শেয়ারবাজারে লিস্টিং দেয়া।

তিনি বলেন, আমরা লিস্টিং দেই না। দেয় সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আমরা বারবার ফেরত পাঠাই, দুর্বল লোকরা পচা কোম্পানিগুলো বাজারে নিয়ে আসছে, যার ফলে আমাদের বিনিয়োগকারীদের রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে। তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি করেছিলাম। আজ পর্যন্ত কমিশন করা হয়নি, একটা লোককেও শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। বাজার থেকে মূলধন ৯৫ হাজার কোটি টাকা নেই।

সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন, পচা কোম্পানিগুলো আমাদের কাছে ছেড়ে দেন। পৃথিবীর কোনো দেশে নেই শেয়ার কিনতে বাধ্য করবে, এই টাকায় শেয়ার বিক্রি করতে হবে। বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় বসে গেছে। শেয়ার মার্কেটে যারা ৩০ বছর ধরে যেত তাদের পায়ে জুতা নেই। তারা বলছেন আমাদের দেখার কি কেউ নেই। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন জগদল পাথরের মতো বসে আছে। শুধু লিস্টিং দেয়াই তাদের কাজ, আর কোনো কাজ নেই। পচা কোম্পানি এনে প্রতিদিন নিঃস্ব করে দেয়া হচ্ছে, কারো বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ইস্যু ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। প্রশান্ত হালদার নামে একটা লোক সে নন-ব্যাংকিং কিছু প্রতিষ্ঠান করে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে গেছেন। উনি দেশে নেই পালিয়ে গেছেন। কার জবাব কে দেবে। এ জন্য অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, নিশ্চই প্রধানমন্ত্রী যদি হস্তক্ষেপ করেন তাহলে শেয়ার মার্কেট আবার ফিরে আসতে পারে। নইলে এখান থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় দেখি না।

তার সঙ্গে একমত পোষণ করে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, মন্ত্রীরা প্রশ্নোত্তর দেন দেশে কোনো বিপর্যয় দেখতে পান না, দেশে কোনো সংকট নেই। এ সমস্ত উত্তর যখন আসে হতভম্ব হয়ে যাই, বিস্মিত হয়ে যাই। গত এক সপ্তাহ যাবৎ পুঁজি বাজারের জন্য মানুষ রাস্তায় শুয়ে পড়েছে, তাদের আজ-কাম নেই বিপর্যস্ত লাখ লাখ পরিবার সম্পূর্ণরূপে ধুলায় মিশে যাচ্ছে। এ ব্যাপের সরকারের কোনো পদক্ষেপ বা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নেই, এই বিষয়ে কোনো আশ্বস্ত হতে পারছি না। মুজিববর্ষ উদযাপন করছি এত প্রবৃদ্ধি এত উন্নতি আমরা চারদিকে বিশাল বিশাল স্থাপনা বানাচ্ছি। সত্যিকার অর্থে অর্থমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের রক্ষার জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তা একটু জানাবেন।

র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ডাকাত, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী ও প্রতারকচক্রসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এ ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ইতিমধ্যেই বিশেষ সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ সকালে বরগুনা জেলার আমতলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে (১) আশিকুর রহমান আশিক@বিল্লাল(২৫), পিতা- মোঃ আলম মৃধা, সাং-মৃধাবাড়ী ওয়াদা সড়ক, থানা-আমতলী, জেলা-বরগুনা, (২) জান্নাতুন তহুরা(৩৫), স্বামী- মোঃ জামাল হোসেন খান, সাং-আমানতগঞ্জ সিরাজুল ইসলাম মানিক সড়ক, থানা-কাউনিয়া, বিএমপি,বরিশাল দুইজন চাঁদাবাজকে আটক করে। উল্লেখ থাকে যে, আসামী মোঃ আশিকুর রহমান আশিক@বেল্লাল দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নাম ব্যবহার করে এবং সে নিজে সাদিক আব্দুল্লাহ পরিচয় দিয়ে ঝ ঝধফরয় অনফঁষষধয নামের ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে যা হুবহু সাদিক আব্দুল্লাহর ফেসবুক আইডির মত। সে উক্ত আইডি ব্যবহার করে লোকজনের বিশ্বস্ততা অর্জন করে ও পরবর্তীতে ফোনে যোগাযোগ করে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা দাবি করে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ এর একটি আভিযানিক দল প্রথমে আশিকুর রহমান আশিক@বেল্লালকে বরগুনার আমতলী থেকে গ্রেফতার করে এবং পরবর্তীতে একটি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের কারণে সহযোগী জান্নাতুন তহুরাকে বরিশালের কাউনিয়া থেকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করে। তারা বিভিন্ন মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ পরিচয় দিয়ে অনেক লোকের কাছ থেকে বিকাশ, রকেট এবং ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চাকরি দেওয়ার নাম করে চাঁদা দাবি করে এবং অনেকের কাছ থেকে নানান রকমভাবে চাঁদার টাকা উত্তোলন করেছে। তাদের চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল এবং সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

123 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন