২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

গ্রেনেড হামলার ১৭ বছর, রাজনীতি থেকে অপশক্তি দূর করতে হবে

আপডেট: আগস্ট ২১, ২০২১

 বহুল আলোচিত ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ১৭ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো ওই হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নিহত হন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের স্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২৪ নেতাকর্মী। আহত হন কয়েকশ।

মূলত তখনকার প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই ছিলেন গ্রেনেড হামলা পরিকল্পনাকারীদের টার্গেট। পৃথিবীতে এমন কলঙ্কজনক ঘটনার নজির নেই বলেই আমাদের ধারণা। ২১ আগস্টের ঘৃণ্য ঘটনার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত ছিল অনেক আগেই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা হয়নি।

মূলত এর পেছনে কাজ করেছে নানা স্বার্থবাদী অপচিন্তা। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে এ সংক্রান্ত মামলা ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে নানাভাবে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে অনেক তথ্যও। জজ মিয়া নামের এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করে তার কাছ থেকে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করে ঘটনার প্রকৃত কুশীলবদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় দফার তদন্তে বেরিয়ে আসে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি)সহ তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।

ভয়াবহ সেই ঘটনার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১।

২১ আগস্টের ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলার আড়ালে প্রকৃত সত্য কী, দেশবাসীর সামনে তা উদ্ঘাটিত হওয়া জরুরি ছিল। দেরিতে হলেও সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে এ হামলার পরিকল্পনাকারী কারা ছিল; কারা অংশ নিয়েছিল হামলায়।

২১ আগস্টের হামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত করা হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। রাজনীতি ভয়াবহভাবে দুর্বৃত্তায়িত হলেই এটি সম্ভব। এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ন্যায়বিচারের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদেরও সজাগ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা ছাড়াও দলের ভেতর থেকে প্রতিহিংসার উপাদান দূর করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থেই রাজনীতি থেকে দূর করতে হবে অপশক্তি ও অপচিন্তা।

137 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন