আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪
এম. মিরাজ হোসাইন বিশেষ প্রতিবেদক :: গত বিপিএলের ট্রফি এখনো বুঝে পায়নি চ্যাম্পিয়ন দল ফরচুন বরিশাল এর দর্শকরা। ফলে বাধভাঙ্গা আনন্দ ও উচ্ছ্বাস ফিকে হয়ে আছে ফরচুন বরিশালের দখিনের কয়েক লাখ দর্শকের। ট্রফি ছুয়ে দেখা ও অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ সকল খেলোয়ারদের দেখার আকাঙ্খা এখনও পুশে রেখেছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে ফরচুন বরিশালের (বিপিএল) দর্শকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আগামি বিপএল এর জন্য ফরচুন বরিশালকে নতুন দল গঠন করতে বলছে বিসিবি কর্তৃপক্ষ।
ফরচুন বরিশাল এর দর্শকরা চ্যাম্পিয়ন ট্রফির জন্য গত এক বছর অপেক্ষায় থাকলেও তা বরিশালে আনা সম্ভব হয়নি সৈরাচার হাসিনা সরকারের সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল অবঃ জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়সবাত ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর চরম বিরোধের কারনে। তারা বিসিবির নিয়ন্ত্রত্রক সভাপতি পাপনকে বারন করায় আজও ফরচুন বরিশাল টিমের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি বরিশালে আনতে দেওয়া হয়নি। যার ফলে বরিশালের মাটিতে আনা সম্ভব হয়নি বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও তামিম ইকবালসহ খেলোয়াড়দের।
ফরচুন বরিশাল এর সমর্থক সরকারী আলেকান্দা কলেজ শিক্ষার্থী মাহিমুল হাসান এমদাদ বলেন, আমরা দীর্ঘ এক বছর যাবত চ্যাম্পিয়ন ট্রফির অপেক্ষায় ছিলাম। তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, মেয়র ও তার ভাতিজার দলীয় কোন্দলে আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম ট্রফিটি ছুয়ে দেখার। আমাদের সে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে। এখন নতুন করে বিপিএলের আসরের আয়োজন চলছে। আগের ট্রফি আমরা দেখতে পারিনি পুনরায় আমাদের দল চ্যাম্পিয়ন হলে সেই ট্রফি আমরা হাতে পাবো কিনা এই অনিশ্চয়তা এখনো আমাদের মাঝে রয়ে গেছে। গত বিপিএল আসরের আমাদের ট্রফি বরিশালের মাটিতে আসলেই আমরা নতুন বিপিএল আসরে অংশগ্রহণ করব কিনা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান করবো ফরচুন বরিশালের কর্ণধ মিজানুর রহমানকে। ট্রফি নিয়ে দলাদলির বিষয়টি আগামীতে ঘটবেনা এই নিশ্চয়তা দিতে হবে তাহলেই নতুন বিপিএল আসরে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত হবে বলে মত তার।
ফরচুন বরিশাল এর দর্শক সাংবাদিক আরিফুর রহমান বলেন, এবারের বিপিএলে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল অংশগ্রহণ করবেন কিনা এমন প্রশ্ন থেকেই যায়। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হবার পরেও ট্রফি সহ উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়দের আসার কথা ছিল। সে আশাই বুক বেঁধেছিল গোটা বরিশাল সহ দক্ষিণ অঞ্চলবাসি। কিন্তু একটি রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে সেই ট্রফি এখন পর্যন্ত বরিশালে আসতে পারেনি এর জন্য বরিশালবাসী অনেকটাই হতাশা বোধ করছে। তবে যতদূর জানা গেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহ ও ফরচুন বরিশালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান এর সাথে অভ্যন্তরীণভাবে মৌনদন্ধ চলে আসছিলো। তারই রেস ধরেই হয়তোবা বরিশালে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আসেনি। ফলে রাজনৈতিক কিছু উদ্দেশ্য স্বার্থ সিদ্ধ করার লক্ষ্যেই গোটা বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল বাসীর আনন্দ উল্লাস ও স্বপ্নের সেই বিপিএলের ট্রফি বরিশালে লঞ্চে আসতে না পারায় সাধারণ মানুষসহ ফরচুন বরিশালের স্বত্বাধিকারী নিজেও ক্ষুব্ধ এমনটাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ সহ বরিশাল বাসীর মতামত। তবে দল মত নির্বিশেষে সেই ট্রফি বরিশালে এনে গোটা বরিশালবাসীর মধ্যে এবং দক্ষিণাঞ্চলের ক্রীড়াঙ্গনকে আরো উজ্জীবিত করা হলে আগামী সেশনে হয়তো বরিশাল ভালো কিছু করবে এবং শতভাগ সাপোর্ট থাকবে বরিশালে প্লেয়ারদের প্রতি। এজন্য ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রেখে পরিচালনা করতে পারলে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি উৎসাহ বাড়বে।
এ বিষয়ে আলাপ কালে ফরচুন বরিশালের কর্ণধার মিজানুর রহমান বলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ ও প্রতি মন্ত্রী কর্নেল অবঃ জাহিদ ফারুক শামীম ও সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত এর মধ্যে কোন্দলের বলি হয়েছি আমরা। যে কারনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও বিপিএল আসর এর মেম্বর সেক্রেটারী ইসমাইল হায়দার মল্লিক আমাকে বরিশালে ট্রফি ও তামিমসহ দলের খেলোয়ারদের আনতে দেয়নি। ফলে ফরচুন বরিশাল এর দর্শকদের বাধ ভাঙ্গা উচ্ছাস ও স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে। দর্শকরা আমাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এখন বিপিএল আসরে নতুন দল গঠন করলে আমরা দর্শকদের কি বলে সান্তনা দিব সেই চিন্তাই করছি।
তবে এবিষয়ে জানতে সাবেক প্রতি মন্ত্রী, মেয়র ও নগর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।