বরিশালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়াড় জন্য ১৭ বছর আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা সরকারকে বার বার বলছি জবাবদিহিতা মূলক সরকার না হলে কোনোদিন জনগণের আস্থা ফিরে আসে না। কেউ বলছেন সংস্কারের পর নির্বাচন আবার বলছেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হবে। কিন্তু আপনার (বর্তমান সরকারের) তো স্থানীয় নির্বাচন করার কোন দায়িত্ব নেই এবং কোনোদিন এটা করতে পারেনও না। আপনাকে (ড. ইউনুস) সংসদ নির্বাচন দিতে হবে এবং তার রোডম্যাপও ঘোষণা করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বরিশাল নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে নগর ভবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্ত মোকাবেলার দাবিতে বরিশালে জেলা দক্ষিণ বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের এখনও স্যালুট করি। তবে আপনাদের বলি আপনারা দল করলে সরকার থেকে বের হয়ে দল করুন। নির্বাচনে আসুন নিশ্চয়ই জনগণ আপনাদের ভালোবাসবেন, কারণ আপনারা বুকের রক্ত দিয়েছেন এই আন্দোলনে। এই জনগণ নিশ্চয়ই ভালোবাসবেন এবং হয়ত নির্বাচিতও করবেন। কাকে নির্বাচিত করলো সেটি বিএনপির দেখার বিষয় নয়, বিএনপির দেখার বিষয় জনগণ যথা মৌলিক অধিকার ফিরে পেয়েছে কিনা।

তিনি বলেন, দুঃশাসনের বাংলাদেশে আইয়ামে জাহিলাতের সরকার পরিণত হয়েছিল। দুঃশাসনে আইয়ামে জাহিলাতের মতো মানুষকে জিন্দা কবর দেয়া হতো। ১৫ টি বছর শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের বুকের ওপর পাড়া দিয়ে রক্ত চুষে খেয়েছে। তাই হাসিনার কোনো দোসরকে দেশে রাখা চলবে না, গেছে। যারা বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে তাদের বিচার হতে হবে।

তিনি বলেন, এত কিছুর পরেও হাসিনা কোন অনুতাপ করেনি, বরং তিনি উলটো কথা বলছেন। পার্শ্ববর্তী দেশে বসে তিনি ষড়যন্ত্র করছেন আর সমানে উসকানি দিচ্ছেন। আমরা এটি মানবো না।

তিনি বলেন, সংস্কার আমরাও চাই, সংস্কার একটি চলমান জিনিস। আজ যেটা ঠিক কাল সেটা বেঠিক হতে পারে। সংস্কার সবসময় পরিবর্তন হয়। সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব। তিনি ৩১ দফা দিয়েছেন, যার মধ্যে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। যে চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আগামী দিনের পরিচ্ছন্ন রাজনীতি গড়ে উঠবে। যে রাজনীতি হবে সাধারণ মানুষের , যে রাজনীতি হবে জনগণের মৌলিক অধিকারের সেই রাজনীতি ৩১ দফার মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ দরকার ঐক্যবদ্ধ সরকার, যে ঐক্যবদ্ধতা আমরা করতে না পারলে আগামী নির্বাচনকে নানান উছিলায় পিছিয়ে দেয়াড় চেষ্টা করা হবে। তবে মানুষের পাশে থেকে আমরা যদি সুন্দর নির্বাচন করতে পারি তাহলে বুঝবো যে স্বপ্ন আশা নিয়ে শহিদ হয়েছেন, তাদের সেই স্বপ্ন-আশা পুরন করতে পারবো।

সভার শেষে তিনি মুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সৈনিকসহ বিএনপি নেতাকর্মীসহ জুলাই বিপ্লবের এর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবুর রহমান সরোয়ার।

বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খানের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ অন্যান্যরা।